জয় রাম

" আপনি আমার দক্ষিণ হাতখানা স্পর্শ কইরা দাঁড়ান ,
দেখেন আপনার পূর্বজন্মের কুকীর্তি।"
,,,,,,,,,, শ্রীশ্রী রামঠাকুর।
সাথে কথা বলছেন,
হঠাৎ ঠাকুর মহাশয় জোরে কুঞ্জবাবুকে ডেকে দরজাটা
বন্ধ করে দিতে বললেন।
" কুঞ্জবাবু দরজাটা বন্ধ কইরা দেন,
যে লোকটা আসতাছে তার মুখ আমি দেখতে চাই না।"
কুঞ্জবাবুর দরজা বন্ধ করতে একটু দেরী হওয়াতে উক্ত ভদ্রলোক ঠাকুরের ঘরে ঢুকে পড়লেন।
ভদ্রলোক টিকে দেখে ঠাকুর বললেন ,
" আপনি ভাবছেন আমারে প্রনাম কইরা গিয়া কড়িকাঠে ঝুলবেন , আপনার এতো বড়ো সাহস ।
আপনারে দফায় দফায় জন্ম নিতে হইব ,_
এই ঋণ শোধ করার জন্য ।
সবাইর স্ত্রীই তো তাদের স্বামীকে যত্ন করেন,
তবে আপনার স্ত্রী কেন আপনাকে মুখযন্ত্রণা দেয়,
ভাইব্যা দেখছেন কী?
আসেন, আমার দক্ষিণ হাতখানা স্পর্শ কইরা দাঁড়ান_,
দ্যাখেন আপনার পূর্বজন্মের কূকীর্তি।"
এবার ভদ্রলোক চিৎকার করে বলতে লাগলেন ,
" ঠাকুর, আমি আর দেখতে পারছি না ,
এ যেন সমস্ত শরীরে আগুন জ্বলছে ।"
এবার ঠাকুর বললেন _,
আজ থাইক্যা ১৪ জন্ম আগে, আজ যিনি আপনার স্ত্রী,
আপনি তার প্রতিবেশী ছিলেন।
এক খণ্ড জমির জন্য আপনাদের মধ্যে বিরোধ বাধে।
একদিন গভীর রাতে আপনারা খেয়া নৌকায় নদী পার হইতেছিলেন _ ,
তখন আপনে দেখলেন ,
যে নৌকা বাইতাছিল, সে আর আপনে ও আপনার প্রতিবেশী ছাড়া আর কেউই নৌকায় নাই।
নৌকা যখন মাঝনদীতে,,,, আপনে হঠাৎ উইঠ্যা আপনার প্রতিবেশী _ এ জন্মে যিনি আপনার স্ত্রী ,_
তারে ধাক্কা দিয়া জলে ফেইল্যা দিছেন।
আপনে দেখতে পাইতাছেন ?"
ভদ্রলোকটি আর্তকন্ঠে বললেন_,
" হ্যাঁ বাবা, দেখতে পাচ্ছি , আর দেখতে চাই না ,
আপনি আমাকে ক্ষমা করেন।"
ঠাকুর ভদ্রলোককে আরও বললেন _ ,
" এর পর ঐ রাত্রেই আপনে আপনার প্রতিবেশীর বাড়ীতে আগুন লাগাইয়া দেন এবং প্রতিবেশীর পরিবারের সবাই আগুনে পুইড়্যা মরে ।
এরপর থিকা আপনাদের বারবার জন্ম নিতে হইছে ।
কখনও আপনি স্ত্রী_ প্রতিবেশী স্বামী , কখনও বা প্রতিবেশী
স্ত্রী _আপনি স্বামী।
এই জন্মে আপনার সদগুরুর আশ্রয় লাভ হইছে বইল্যাই আপনার স্ত্রী বাক্যযন্ত্রণা দিয়াই আপনাকে রেহাই দিতাছে ,_
তা না হইলে আপনার মুখে ঝামা ঘইষ্যা দিত।"
তারপর ঠাকুর ভদ্রলোককে আরও জোরে ধমক
দিয়ে বললেন,
" যান এবার থিকা স্ত্রীকেই গিয়া সেবা করেন ,
আপনার স্ত্রীর মধ্যেই আমি আছি"।
শ্রীশ্রীঠাকুর বলেন ,
প্রারব্ধভোগ সকলকেই ভুগতে হয় ,
কেবল নামেই কিছুটা প্রারব্ধ কাটে।
রামঠাকুর
বীরেন্দ্র নাথ বসু লিখিত।
No comments:
Post a Comment