ঠাকুর বলিতেন যে, বদ্ধ হইবার শক্তি জীবের আছে কিন্তু উদ্ধার হইবার শক্তি নাই।
জীবের বন্ধনের কারণ ও উদ্ধারের উপায়ঃ
"সীতা, রাম ও লক্ষণের সহিত, পঞ্চবটীতে কুটীর বাঁধিয়া মহাসুখে বাস করিতেছিলেন। তিনি যা রাজনন্দিনী, রাজকুলবধূ, তাহা তিনি ভুলিয়াই গিয়েছিলেন। রাজপ্রাসাদের সেই বিলাস পঙ্কিল, খরস্রোত জীবন তাঁহার নিকট স্বপ্ন বলিয়াই মনে হইত। পরিধানে সামান্য বঙ্কল, ফলমূল আহার, কিন্তু সকলই অমৃততুল্য, স্বামীর অকুন্ঠ প্রেম ও দেবরের নিষ্কলুষ স্নেহ তাঁহাকে এক বিচিত্র মধুর নিগড়ে মুগ্ধ করিয়া রাখিয়াছিল।
এককথায় কোন অভাবই তাঁহার ছিল না। কিন্তু হঠাৎ একদিন তিনি প্রলোভনে পড়িয়া গেলেন, মায়ামৃগ দেখিয়া তিনি আত্মহারা হইলেন। স্বর্ণমৃগ যে কখন বাস্তব হইতে পারে না, তাহা যে নিশ্চিত অলীক, মায়ামরীচিকা ভিন্ন অন্য কিছুই নহে, এই প্রকারের কোন যুক্তিই তাঁহার মনে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করিল না, নিদারুণ প্রলোভনে তিনি তখন কান্ড জ্ঞানহীন। ফল দাঁড়াইল এই যে, রাবণ তাঁহাকে হরণ করিয়া লইয়া গেল, পথে জটায়ুর সাহায্যে কিছুই হইল না, সীতা অশোক বনে বন্দিনী হইয়া রহিলেন। জীবও এই প্রকার মায়ামরীচিকার পিছনে ঘুরিয়া বন্দী হয়, প্রলোভনই বন্ধনের কারণ।"
"আবার রামই আসিয়া তাঁহাকে উদ্ধার করিলেন। সুগ্রীবের সহিত মিত্রতা করিয়া, সমুদ্রে সেতুবন্ধন করিয়া, ঘোরতর যুদ্ধের পর রাবণকে সবংশে নিধন করিয়া সীতাকে উদ্ধার করিয়া লইয়া গেলেন।
কিন্তু সীতা করিলেন কি? তিনি চেড়ীগণের প্রলোভন ও শাসন অকাতরে সহ্য করিয়া অনুক্ষণ রাম চিন্তায় মগ্ন হইয়া রহিলেন। সুতরাং দেখা গেল যে, বন্ধনের কারণ যেমন প্রলোভন, উদ্ধারের উপায় অনন্যচিন্তা ও অকাতরে প্রারব্ধ বেগ সহ্য করা।
" ঠাকুর বলিতেন যে, বদ্ধ হইবার শক্তি জীবের আছে কিন্তু উদ্ধার হইবার শক্তি নাই।
রাম ঠাকুরের কথা
ডক্টর ইন্দুভূষণ বন্ধোপাধ্যায়
ঠাকুর বলিতেন যে, বদ্ধ হইবার শক্তি জীবের আছে কিন্তু উদ্ধার হইবার শক্তি নাই।
Reviewed by srisriramthakurfbpage
on
April 24, 2024
Rating:
No comments: