সংসারারণ্যে প্রবিষ্ট, গন্তব্য পথের দিক সম্বন্ধে মোহগ্রস্ত ও বিভ্রান্ত পথিককে যিনি গন্তব্যপথ প্রদর্শন করাইয়া থাকেন,সেই শ্রীগুরুকে প্রণাম।
এই পুস্তকে যাঁহার আত্মকথা বিবৃত হইয়াছে কৈবল্যধামের সেই বিদেহী মোহন্ত মহারাজ ঁশ্যামাচরণ চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ও পূর্বাশ্রমে তেমনি একজন ভবারণ্যে প্রবিষ্ট দিগভ্রান্ত পথিকের মত ব্যাকুল চিত্তে পথ খুঁজিতেছিলেন। অহেতুক কৃপাসিন্ধু সদগুরু শ্রীশ্রীরাম ঠাকুর তাঁহাকে শুধু গন্তব্যপথের নির্দেশ দিয়াই ক্ষান্ত হন নাই,পরন্তু অসীম কৃপাভরে তাঁহাকে কিভাবে হাত ধরিয়া গন্তব্যস্থলে পৌঁছাইয়া দিয়াছেন, 1
গুরু-শিষ্যের সেই দিব্যলীলা কথা "শ্রীমৎশ্যামদাদার আত্মকথায়" বর্ণিত হইয়াছে। মোহন্ত মহারাজের গ্রন্থরচনার কৈফিয়ৎটি এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য,—
"যাঁহার দুর্জ্ঞেয় অনন্ত শক্তি, অনন্ত কাজ তাঁহার বিষয় আমার ন্যায় ক্ষুদ্র মানব কি বর্ণনা করিতে পারে? তিনি সামান্য কয়েকদিন এই নরাধমকে তাঁহার চরণে স্থান দিয়াছিলেন।আমি তৎকালে তাঁহার যে দু চারিটি কাজ স্বচক্ষে দেখিয়াছি তাহা আমার গুরু-ভ্রাতাগণের মনস্তুষ্টির নিমিত্ত তাঁহাদের সমক্ষে উপস্থিত করিলাম। তজ্জন্য আমার অপরাধ হইয়াছে সুনিশ্চিত। আমার ইহকাল ও পরকালের একমাত্র বিধাতা পরমারাধ্য দয়াময় ইষ্টদেবের শ্রীপাদপদ্মে দন্তে তৃণ ধারণ করিয়া সকাতরে ক্ষমা ভিক্ষা করিতেছি।
"
প্রায় ২৫ বৎসর পূর্বে ডিঙ্গামাণিক শ্রীশ্রীসত্যনারায়ণ সেবা মন্দিরের শ্রীযুক্ত মহেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী মহাশয়ের বিশেষ অনুরোধে কৈবল্যধামের বিদেহী মোহন্ত মহারাজ ঁশ্যামাচরণ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় তাঁহার প্রথম জীবনের যে অংশ শ্রীশ্রীরামঠাকুরের সহিত জড়িত ছিল তাঁহার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিজে লিখিয়া পাণ্ডুলিপিখানি শ্রদ্ধেয় চক্রবর্ত্তী মহাশয়ের হাতে দিয়াছিলেন।
মোহন্ত মহারাজ ১৪/১৫ বৎসর বয়সে শ্রীশ্রীরামঠাকুরের প্রথম দর্শন ও কৃপালাভ করেন।ইহাকেই তিনি তাঁহার জীবন নাট্যের প্রথম অঙ্ক বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন।
"শ্যামদাদার আত্মকথা" আরম্ভের পূর্বে সংকলয়িতা শ্রীচক্রবর্ত্তী মহাশয় উপক্রমণিকায় মোহন্ত মহারাজের বাল্য জীবনের একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি যোগ করিয়া জিজ্ঞাসু পাঠকদের ধন্যবাদাই হইয়াছেন।
মোহন্ত মহারাজ এই আত্নকথায় তাঁহার জীবন নাট্যের তৃতীয় অঙ্ক পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াই থামিয়া গিয়াছেন।
গ্রন্থের সম্পাদক মহাশয় 'পরিশিষ্টে' চতুর্থ ও পঞ্চম অঙ্ক সংযোজন করিয়া মোহন্ত মহারাজের অবশিষ্ট জীবন ও কর্মকৃতির উপর ধারাবাহিক ও কালানুক্রমিক সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রদান করতঃ ইহাকে পূর্ণতা দান করিয়াছেন।উপক্রমণিকা ও পরিশিষ্ট সমন্বিত এই 'আত্মকথা' কৈবল্যধামের বিদেহী মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ ঁশ্যামাচরণ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁহার গুরুদেবকে জানিবার ও বুঝিবার পক্ষে বিশেষ সহায়ক হইবে সন্দেহ নাই। 'শ্যামদাদার আত্মকথায়' শ্রীশ্রীরামঠাকুরের অলৌকিক রহস্যময় দিব্যজীবনের এমন কয়েকটি ঘটনা বর্ণিত হইয়াছে যাহা ইতঃ পূর্বে অন্যত্র প্রকাশিত হয় নাই।প্রত্যক্ষদর্শী শিষ্য ঁশ্যামাচরণ স্বয়ং ঘটনাগুলির বিবরণ দেওয়াতে ইহাদের গুরুত্ব সমধিক বৃদ্ধি পাইয়াছে।
এই গ্রন্থখানি সম্পাদিত ও প্রকাশিত করিয়া "শ্রীশ্রীরামঠাকুরের জীবনকথা" প্রণেতা শ্রীমহেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী মহাশয় ধর্মপিপাসু পাঠকবর্গ তথা শ্রীশ্রীরামঠাকুরের অগণিত ভক্তমণ্ডলীর বিশেষ শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতাভাজন হইবেন-এইরুপ আশা ও বিশ্বাস পোষণ করিতেছি।
শ্যামদাদার আত্মকথা
শ্রীমহেন্দ্র চন্দ্র চক্রবর্তী
শ্যামদাদার আত্মকথা শ্রীমহেন্দ্র চন্দ্র চক্রবর্তীII
Reviewed by srisriramthakurfbpage
on
April 24, 2024
Rating:
No comments: