ঠাকুর!আপনার সেবার জন্য কী ব্রাহ্মণ দিয়ে রান্না করাতে হয়?
"আমি তো এর আগের জন্মে ৩৬ জাতীর হাতে খাইয়া জাত দিয়াই দিছি। এখন ব্রাহ্মণ দিয়া রান্না করাই আমারে জাতে তোলনের দরকার নাই।"
-:যাদের অন্তরের ভাব টল মল তারাই বলে সব গেল গেল। যারা আত্ম বলে বলীয়ান নয় যারা সত্য বলে বলীয়ান নয়, যাদের আত্মবিশ্বাস নেই,তারাই সকল দুর্বলতায় ভোগে ।তাদের জাতি,বর্ণ,ধর্ম, কৈলিন্য সবই যায়। ঠাকুরের যেন এসবের কোন ভাবনাই নেই।
শুধু অন্যের হাতে রান্না করা দু মুঠো অন্ন যদি ব্রাহ্মণের ব্রহ্মত্ব বিনষ্ট করতে পারে পরের একটু পরশে ব্রাহ্মত্ব চলে যেতে পারে, সে ব্রাহ্মণের উপর ভরসা করা যায় কী করে?
এ দেহ তো একটা মাংসপিণ্ড। এর হৃদিস্থানেই ঈশ্বর বিরাজমান। তিনিও একটি রক্তমাংসের দেহ মন্দিরে অবস্থান করেন। তাই এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ কি?
যে জিহ্বায় যে কন্ঠে ঈশ্বরের নাম স্বরন কীর্তন হয়,
সকল দেব দেবীর নাম ও ভজন পূজন হয় তাও তো রক্তমাংসের।
যে নিত্যানন্দ মৃদঙ্গ বাজিয়ে নামানন্দ কীর্ত্তন হয় এতেও যদি জীবের চামড়াই থাকে তাহলে বাচ বিচার করব কাকে?
শুধু মাছ মাংস ছাড়লেই নিরামিষভোজন করলেই ঈশ্বর দর্শন মিলবে?
নাকি এর সাথে আরও কিছু লাগবে?
অন্তরের কামনা-বাসনা, লালসা, অহংকার, অভিমান, চালবাজি, ঠকবাজি, ধান্দাবাজি এইসব নিরামিষ করতে হয়।
প্রাণের ঠাকুরের নামাশ্রয় প্রদান ও গ্রহণ হলো হৃদয় হতে হৃদয়ে অন্তর হতে অন্তরে প্রাণ হতে প্রাণে যে নাম কর্ণে শ্রবণ করে মর্মমূলে গেঁথে থাকে সে নামকে বাইরের ধুলা-ময়লা কি ক্ষতি করতে পারে?
কোথায় পায়ের ধূলা, গায়ের ঘাম, কোথায় প্রাণের মাঝে হরিনাম।কোথায় পেটের ভাত, কোথায় হৃদয়ে জগন্নাথ। এসবকে একাকার না করে হৃদয়ানন্দে সর্বাবস্থায় নামাশ্রয়ে থাকলে অন্তরের গভীরের মলিনতা দূর হয়।
নামের মধ্যে অক্ষয় সুধা লুকিয়ে আছে কষ্ট করেই তাকে বার করতে হয়।
অনবরত নাম করিতে থাকিবে একদিন সেই সুধার আস্বাদন পাওয়া যাবেই।
তাতে কোন সন্দেহ নাই। দেবতাদের ও নাম করিতে হয় নিষ্কৃতি কৈ? নাম সদা পূর্ণ। এ নামে আছে সবকিছু।
নামের সহিত একটু ধৈর্য ধরিয়া পড়িয়া থাকিলেই হয়। আর কিছু লাগেনা।
নাম সত্য, নাম মুক্ত, নাম ধর্ম সার
নাম বই সংসারেতে কিছু নাই আর
ভগবান এবং নাম নামি অভিন্ন।
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ
on
December 30, 2024
Rating:
No comments: