জয় গুরু জয় শ্রী রাম । একখানি পত্রে ঠাকুর লিখিয়াছিলেনঃ “ সত্যনারায়ণ নিৰ্ব্বংশ , তাঁর সেবক নিৰ্ব্বংশ জানিবে ।”


 

জয় গুরু জয় শ্রী রাম ।
একখানি পত্রে ঠাকুর লিখিয়াছিলেনঃ
“ সত্যনারায়ণ নিৰ্ব্বংশ ,
তাঁর সেবক নিৰ্ব্বংশ জানিবে ।”
(বেদবাণী , প্রথম খণ্ড , ৩৪৫নং)।
তাঁহার দেহ ত্যাগের কয়েক বৎসর পূর্ব্ব হইতে তিনি তাঁহার আশ্রিতবর্গের মধ্যে সত্যনারায়ণ সেবার প্রচলন করিয়াছিলেন ,
সেই সময় হইতে ঠাকুরের আশ্রিতেরা প্রায় সকলেই সত্যনারায়ণের সেবা করিয়া আসিতেছেন ,
কোন কোন গৃহে এই সেবা প্রত্যহই অনুষ্ঠিত হয় ।
সুতরাং ঠাকুরের এই কথাটি যখন ছাপার হরফে বাহির
হইয়া গেল ,
অনেকের মনেই ইহা একটা আলোড়নের সৃষ্টি করিল । সত্যনারায়ণের সেবা করিলে যদি " নিৰ্ব্বংশ " হইতে হয় ,
তাহা হইলে ঠাকুর এই সেবার প্রচলন করিলেন কেন ?
এই কথাটা লইয়া অনেকেই আমার নিকট আসিয়াছেন এবং এ বিষয়ে আমি কয়েকখানি পত্রও পাইয়াছি ।
কিন্তু সমস্যাটা জটিল নহে ,
“ নিৰ্ব্বংশ ” কথাটাকেও উপরোক্ত “ সর্বনাশ ”
কথাটার মতই বুঝিতে হইবে ।
এই " নিৰ্ব্বংশ " কথাটার সম্পর্কে ঠাকুর কখন কখন রক্তবীজের কাহিনীটির উল্লেখ করিতেন ।
অমিততেজা রক্তবীজ দৈত্যরাজ শুভের সেনাপতি ।
রক্তবীজের বিশেষত্ব ছিল এই যে , তাহার শরীর হইতে ভূমিতে রক্ত বিন্দু পতিত হইলেই পৃথিবী হইতে সর্ব্ব প্রকারে তাহার ন্যায় বলবিক্রম সম্পন্ন আর একটি অসুরের উদ্ভব হইত ।
সুতরাং রক্তবীজ যখন যুদ্ধার্থে অগ্রসর হইয়া আসিল ,
তখন দেবী এক মহাসমস্যায় পড়িলেন ।
প্রথমে রক্তবীজ গদাহস্তে ঐন্দ্রীর সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলেন ।
ঐন্দ্রী স্বীয় বজ্রের দ্বারা রক্তবীজকে আহত করিলেন ,
কিন্তু বজ্রাহত তদীয় দেহ হইতে রক্তস্রাব হইতে লাগিল এবং সঙ্গে সঙ্গে রক্তবিন্দুগুলি হইতে নূতন নূতন রক্তবীজ উত্থিত হইতে লাগিল ।
বৈষ্ণবী চক্রের আঘাতে রক্তবীজের দেহ ছিন্ন ভিন্ন
হইয়া গেল কিন্তু তাহার দেহের রক্ত প্রবাহ হইতে সহস্র সহস্র মহাসুরের উদ্ভব হইল ।
শেষে এমন অবস্থা হইল যে ,
রক্তবীজের রক্তসম্ভূত এই সকল মহাসুরে জগৎ পরিব্যাপ্ত হইয়া গেল ,
ইন্দ্ৰাদি দেবগণ অত্যন্ত আতঙ্কিত হইয়া-পড়িলেন ।
অবস্থা যখন এইরূপ ভয়াবহ হইয়া দাঁড়াইল ,
তখন দেবী চামুণ্ডাকে তাঁহার মুখবিবর বিস্তার করিতে বলিলেন ।
দেবীর অস্ত্রাঘাতে যে সকল অসুর নিহত হইতে লাগিল ,
চামুণ্ডা তাহাদের রক্তাক্ত দেহ নিজ মুখের মধ্যে গ্রহণ করিতে লাগিলেন ,
আর নূতন অসুর জন্মাইতে পারিল না ।
এইভাবে ক্রমে ক্ষীণরক্ত হইয়া রক্তবীজ প্রাণত্যাগ করিল ।
ঠাকুর বলিতেন যে ,
রক্তবীজ হইল বাসনার প্রতীক , বাসনা হইতেই বাসনার সৃষ্টি হয় ,
এই বাসনা-পরম্পরা কিছুতেই নিবৃত্ত হইতে চাহে না ।
কিন্তু চামুণ্ডা যেমন রক্তবীজের এক বিন্দু রক্তও মাটিতে পড়িতে না দিয়া ,
শূন্যে নিজের মুখের মধ্যে তাহা গ্রহণ করিয়া রক্তবীজের জড় মারিয়া দিলেন ,
সেইরূপ কেহ যদি শূন্যের সহিত সম্বন্ধ পাতাইয়া ধীরে ধীরে এই বাসনাগুলিকে শূন্যে মিলাইয়া দিতে পারে তাহা হইলে এই বাসনা-বংশ-পরম্পরা আর থাকে না ,
রক্তবীজের নিধন হয় এবং
" নিৰ্ব্বংশ " হওয়া যায় ।
জয় গুরু ।
জয় সত্যনারায়ণ ।
ডক্টর ইন্দুভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ।
রাম ঠাকুরের কথা ।
পৃষ্ঠা সংখ্যা ২২৯ হইতে ।
,
 
জয় গুরু জয় শ্রী রাম । একখানি পত্রে ঠাকুর লিখিয়াছিলেনঃ “ সত্যনারায়ণ নিৰ্ব্বংশ , তাঁর সেবক নিৰ্ব্বংশ জানিবে ।” জয় গুরু জয় শ্রী রাম । একখানি পত্রে ঠাকুর লিখিয়াছিলেনঃ “ সত্যনারায়ণ নিৰ্ব্বংশ , তাঁর সেবক নিৰ্ব্বংশ জানিবে ।” Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel) on April 08, 2025 Rating: 5

No comments:

শ্রী শ্রী রামঠাকুরেরস্বহস্ত লিখিত পত্রাংশ -দ্বিতীয় খন্ড-223

Powered by Blogger.