শ্রীশ্রীরামঠাকুরের অমৃত বাণী
(পরম পূজ্যপাদ চতুর্থ শ্রীমোহান্ত মহারাজজী শ্রীমৎ ভবতোষ বন্দ্যোপাধ্যায় মহোদয়ের ডায়েরী হইতে উদ্ধৃত)
কেবল ঠাকুর ঠাকুর করিলেই হয় না। সমস্ত রকমে ঠাকুরের আজ্ঞাধীন এবং আদেশ পালন করিলে ত্রিজগতে ভয়ের কারণ থাকে না। সর্বদা একভাবে থাকা প্রয়োজন। সুবিধাবাদী হইলে চলিবে না। ঠাকুরই সব করাইতেছেন সত্য, সুতরাং সত্য যাহা তা হইবেই। কপটাচরণ ত্যাগ না করিয়া শুধু ঠাকুর ঠাকুর করিলে চলিবে না। বাগানের মালী জানে কোনগুলি গাছা ও আগাছা। যখন আগাছা যায় তখন গাছা আগাছা উভয়েই ভয় পায়, কিন্তু মালীর ভুল হয় না। তোমার ভালোর জন্য যাহা ভাল তাহাই তোমার নিকট পর পর উপস্থিত করিতেছি। সুতরাং ধৈর্য্য ধরিয়া থাক, তোমার ছুটাছুটিতে কিছুই হইবে না। আমি তোমার মঙ্গলই করিব। মনে করিলেই আমাকে দেখিতে পার এই ব্যাপারটা তোমার পার্থিব ব্যাপারের মতন নহে। আমি তোমার সঙ্গে সর্বদার তরেই আছি একথা সত্য এবং তোমার সকল ভালো মন্দ কাজের শক্তিও তোমার কামনা বাসনা অনুযায়ী আমিই যোগাইতেছি। আমি তোমার এত নিকটে তবুও দেখিতে পাও না কেন? তুমি তোমার কর্ম দ্বারাই আবরণ বানাইয়া ক্রমশ: আমাকে আরও দূরে সরাইয়া দিতেছ।
জয়রাম।। জয়রাম।।
বাণীর ব্যাখ্যা
এই অমৃত বাণীতে শ্রীশ্রীরামঠাকুর আমাদের জীবনের একটি মহান সত্য শিক্ষা দিয়েছেন—কেবল মুখে ঠাকুর ঠাকুর বললেই হবে না। তাঁর নির্দেশ মেনে চললেই জীবনে ভয় দূর হয়। ঠাকুর সব করছেন, তাই যা সত্য তা অবশ্যই ঘটবে।
ঠাকুরের উপমা অনুযায়ী, বাগানের মালীর মতই তিনি জানেন কোনটি প্রয়োজনীয় আর কোনটি অপ্রয়োজনীয়। জীবনে যে কষ্ট আসে তা-ও আসলে আমাদের মঙ্গলের জন্য। তাই অস্থির না হয়ে ধৈর্য ধরতে হবে।
তিনি প্রতিদিন আমাদের নিকটেই আছেন, কিন্তু আমাদের কর্মফল ও মায়া আবরণ তৈরি করে তাঁকে অদৃশ্য করে রাখে। যদি আমরা কপটাচরণ ত্যাগ করে সত্যিকারের আত্মসমর্পণ করি, তবে তাঁকে উপলব্ধি করা সম্ভব।
এই বাণীর মূল শিক্ষা হলো—ধৈর্য, আত্মসমর্পণ ও সত্যচরিত্র ধরে রাখা। ঠাকুর সর্বদা আমাদের মঙ্গলের জন্যই কাজ করছেন, তাই ভয়ের কিছু নেই।
No comments:
Post a Comment