শ্রীগুরুগীতা — শ্লোক ৫০: গুরুং ব্রহ্ম নমাম্যহম্

🕉️ শ্লোক ও উচ্চারণ
“নিত্যং শুদ্ধং নিরাভাসং নিরাকারং নিরঞ্জনম্।
নিত্যবোধং চিদানন্দং গুরুং ব্রহ্ম নমাম্যহম্॥”
— শ্রীগুরুগীতা (শ্লোক ৫০)
উচ্চারণ: nityaṁ śuddhaṁ nirābhāsaṁ nirākāraṁ nirañjanam | nityabodhaṁ cidānandaṁ guruṁ brahma namāmyaham ||
🔤 শব্দার্থ
- নিত্যং — চিরন্তন, সর্বকালে বিদ্যমান
- শুদ্ধং — পবিত্র, কলঙ্কমুক্ত
- নিরাভাসং — মায়ার প্রতিচ্ছবি/আভাসহীন
- নিরাকারং — রূপাতীত, আকারহীন
- নিরঞ্জনম্ — দোষ-মুক্ত, আসক্তি-মুক্ত
- নিত্যবোধং — চিরজ্ঞানময়
- চিদানন্দং — চৈতন্য ও আনন্দের অবিচ্ছেদ্য স্বরূপ
- গুরুং ব্রহ্ম — গুরুরূপে পরব্রহ্ম
- নমাম্যহম্ — আমি প্রণাম করি
📖 অর্থ (সহজ ব্যাখ্যা)
আমি সেই গুরুদেবকে প্রণাম করি যিনি চিরন্তন ও কলঙ্কমুক্ত; যিনি মায়ার আভাসের ঊর্ধ্বে, রূপ-আকারের সীমা ছাড়িয়ে আছেন; যিনি দোষমুক্ত ও আসক্তিহীন; যিনি চিরজ্ঞানময় এবং চিদানন্দস্বরূপ। অর্থাৎ গুরু আসলে ব্রহ্মতত্ত্ব—মানবরূপে প্রকাশ পেলেও তাঁর স্বরূপ নিত্য, শুদ্ধ ও আনন্দময়।
🌼 আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
- গুরু কেবল ব্যক্তি নন; তিনি পরম ব্রহ্মের প্রকাশ।
- গুরুর চেতনায় যে চিরজ্ঞান ও আনন্দ জাগ্রত, সেটিই আমাদের আত্মস্বরূপ।
- গুরুকে প্রণাম মানে সত্য-ব্রহ্মকে প্রণাম—ভক্তিতে এই উপলব্ধিই মুক্তির পথ।
✅ মূল শিক্ষা (Key Takeaways)
- সংসারের কাজও সাধনা হতে পারে—স্মরণে থাকলে চিদানন্দ-স্বরূপ গুরু।
- নিরাকার সত্যকে গুরু ‘রূপে’ কাছাকাছি এনে দেন; তাই গুরু-ভক্তি হল ব্রহ্মভক্তির দ্বার।
- অন্তরের পবিত্রতা ও সংযম—গুরুকৃপা গ্রহণের প্রধান অর্ধেক প্রস্তুতি।
🙋 প্রশ্নোত্তর (FAQ)
‘নিরাভাস’ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
কারণ সত্যের সঙ্গে মায়ার ছায়া মিশলে জ্ঞান আচ্ছন্ন হয়। গুরুতত্ত্ব সেই ছায়াহীন চৈতন্যেরই নির্দেশ।
এই শ্লোক দৈনিক পাঠের উপকারিতা?
দৈনিক পাঠে মনে স্থিরতা, ভক্তিতে নম্রতা এবং গুরুকৃপা স্মরণে আত্মবিশ্বাস জাগে।
No comments:
Post a Comment