" আপনাকে আপনারই নাম দিলাম ।" : - - শ্রীশ্রী রামঠাকুর ।


১৯৪০ কিংবা ১৯৪১ সাল হইতে পারে । সদানন্দ চক্রবর্ত্তী মহাশয়ের সঠিক সাল তারিখ
স্মরণ হইতেছিল না । তবে তিনি নিশ্চিত ছিলেন বিয়াল্লিশের মন্বন্তরের দুই তিন বৎসর পূর্বে ছিল সময়টি ।
যাদবপুর আশ্রম তখনও প্রতিষ্ঠিত হয় নাই ।

১৯৩৯ সালও হইতে পারে ।
কারণ বিয়াল্লিশের দুর্ভিক্ষ সম্বন্ধে শ্রীশ্রী রামঠাকুর একটি কথা আগাম বলিয়াছিলেন । সেই কথায় পরে আসা হইতেছে ।কলিকাতায় শ্রীযুক্ত কুঞ্জ মজুমদার মহাশয়ের গৃহে শ্রীশ্রী ঠাকুরের শুভাগমন হইল ।
এইবার বেশ কিছুদিনের ব্যবধানে ঠাকুর
কলিকাতায় আসিলেন ।
.
সদানন্দবাবু তখন থাকিতেন ভবানীপুরে ।
তাঁহার ভাষাতেই বিষয়টি বলা হইতেছে ।
- এবার ঠাকুরের মধ্যে কিছু পরিবর্ত্তন দেখতে পেলাম । লক্ষ্য করলাম ঠাকুর মশায় প্রায় সবসময় একটার পর একটা সত্যনারায়ণের পাঁচালী লিখে চলেছেন ।
লেখা শেষ করে নিজের কাছে বেশীক্ষণ রাখতেন না । কোন না কোন আশ্রিতভক্ত এলেই তার হাতে লেখা পাঁচালী খানা দিয়ে বলতেন ,
‘" সত্যনারায়ণ কইরেন ,
সত্যনারায়ণকে সিন্নী দিয়া পাঁচালীখান পইড়েন । কামনা বাসনা সত্যনারায়ণকেই জানাইতে হয় ।'"
তার পিঠে হাত দিয়ে ‘"জয় গোবিন্দ , জয় গোবিন্দ'" বলে আশীর্ব্বাদ করছেন ।
আর একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেল ঠাকুর মশায়কে কেউ এসে প্রণাম করলে "‘জয় গোবিন্দ’" বলতে
তাঁকে আগেও শুনেছি ।
এখনকার মত এত বেশী নয় ।
কিন্তু অবাক হলাম ,

নাম না পাওয়া কেউ এসে ঠাকুরকে প্রণাম করলে
তিনি তাকে যেচে বলতে থাকেন ,
“আপনে নাম নিবেন ?”

নিজে থেকেই ডেকে ডেকে নাম দিতে লাগলেন ।
নামও দিচ্ছেন একই নাম “গোপাল গোবিন্দ ।"
ঠাকুরের এই পরিবর্তন দেখে মনে মনে অবাক হলাম । এই ভাবটা আগে কখনও দেখা যায়নি ।
দেখেছি নাম পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কেউ ঠাকুর মশায়ের কাছে নাম প্রার্থনা করলে ,
তিনি কতক্ষণ চুপ থাকতেন ,
হাতের কর গুনতেন ।

হাতের কর গোনা দেখলেই আমরা বুঝতাম এবার ঠাকুর নাম দেবেন ।
কর গোনার পরে দেখা যেত ঠাকুর কোন না কোন একটা নাম দিয়ে বলতেন ,
“আপনাকে গুরু এই নাম দিলেন”।
কখনও অন্যজনকে বলতেন ,
“আপনাকে মহাপ্রভু এই নাম দিলেন ।”
কখনও বলতেন ,
“আপনাকে আপনার নামই দিলাম ।”
আবার কখনও কিছুই বলতেন না ।
শুধু নাম দিয়ে নামের ব্যাখ্যা করতে থাকেন ।
লক্ষ্য করতাম সেই নামগুলি কোন একটি নির্দ্দিষ্ট নাম বা নির্দ্দিষ্ট অক্ষরের হতো না ! ভিন্ন ভিন্ন নাম যেমন থাকত , নামের অক্ষরও থাকত বিভিন্ন , কখনও কখনও এমন দেখেছি ঠাকুর মশায় চুপ
করে থাকার পরে বলতেন , “কৈ আপনের নাম তো খুঁইজা পাইলাম না ,
আপনার নাম আমার কাছে নাই ।”পরে দেখেছি তিনি ,

...............................................
মহারাজ হরিদা এবং শ্যামদার নাম করে কাউকে কাউকে বলতেন ,
“আপনে হরিবাবুর কাছে যান ।”
বা “শ্যামবাবুর কাছে যান ।”
যদিও হরিদা নাম দেন নি ,
তবে মহারাজ শ্যামদা প্রথমে নাম দিতে অসম্মতি প্রকাশ করলে শ্রীশ্রী ঠাকুরের দৃঢ়তা-পূর্ণ আদেশ উপেক্ষা করতে না পেরে পরে নাম দিতে শুরু করেছিলেন ।
ইত্যাদি সব পরিবর্তন ঠাকুরের মধ্যে দেখে আমার
মনে কয়েকটি প্রশ্ন জাগল ।

" আপনাকে আপনারই নাম দিলাম ।" : - - শ্রীশ্রী রামঠাকুর । " আপনাকে আপনারই নাম দিলাম ।"   : - -  শ্রীশ্রী রামঠাকুর । Reviewed by srisriramthakurfbpage on May 31, 2023 Rating: 5

No comments:

শ্রী শ্রী রামঠাকুরেরস্বহস্ত লিখিত পত্রাংশ -দ্বিতীয় খন্ড-223

Powered by Blogger.