মধু মাখা কৃষ্ণ নাম।। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।। হরে রাম হরে রাম ,রাম রাম হরে হরে।। কীর্তন
মধু মাখা কৃষ্ণ নাম।।
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।। হরে রাম হরে রাম ,রাম রাম হরে হরে।।
কীর্তন
সংসার মায়াময়, কেবল কর্ত্তৃত্বাভিমানেই মুগ্ধ। অহংপ্রাণের বৃদ্ধিই মায়াচক্রে ভ্রমণশীলতা লাভ করে। সুখ দুঃখ যাহার যাহার ভাগ্যবশতঃই লাভ হয়। শুভ অশুভ উভয়ই কৈতব প্রধান যাহা হইতে কৃষ্ণভক্তি অন্তৰ্দ্ধান হইয়া থাকে। শুভ অশুভ কৰ্ম্মই কৃষ্ণভক্তির বাধক হয়। ইচ্ছা, অনিচ্ছা জীবের অধিকার নাই, গুণ চঞ্চলতার বিবর্ণ মাত্র, অবিদ্যা কারখানা। ইচ্ছাময় অর্থাৎ যখন কোন ইচ্ছাই থাকে না সেই অবস্থায় কামগন্ধ বিন্দুমাত্রও ব্রজধামে থাকিতে পারে না, ঐসকল অহংকারের পরিকর ধরফরানি মাত্র।
বেদবাণী প্রথম খণ্ড - ৩৭নং পত্রাংশ
শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্রদেব
***************************************************************************************************
আর একটি ঘটনার কথা মনে আসছে। ঠাকুরের ভক্ত অতুল বাবু কালীঘাটের পাতুরিয়া পট্টিতে থাকতেন। মাঝে মাঝেই উৎসবাদি করতেন। একদিন শ্রীশ্রীঠাকুরের পূজা উপলক্ষে ওঁদের বাড়ীতে আমারও উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ এলো। স্বয়ং শ্রীশ্রীরামঠাকুর উপস্থিত। নাম গান কীর্তনে মেতে উঠেছেন সকলে। যথা সময়ে ঠাকুরকেই ভোগ নিবেদন করতে অনুরোধ করা হলো। তখন আমিও ভক্তবৃন্দের সঙ্গে পাশের ঘরে চলে গেলাম এবং সেখানে নামকীর্তনে যোগদান করলাম।
ভক্তবৃন্দের সঙ্গে আমারও ঠাকুর ঘরে গিয়ে ভোগ দর্শনলাভের সৌভাগ্য হয়েছিল। ভোগের উপর দেবতাদের আঙ্গুলের চিহ্ন ও নানা জায়গায় ফুল ছড়ানো দেখে আমিও নিজেকে ধন্য মনে করেছিলাম।
কৃপাসিন্ধু
রামঠাকুর
মনোরঞ্জন মুখোপাধ্যায়
(পৃষ্ঠা সংখ্যা নয় -দশ)
******************************************************************************************************
শ্রীশ্রী রামঠাকুরের কথা শুনিয়া অখিলবাবু আর নিজেকে সংবরণ করিয়া রাখিতে পারিলেন না ।
এতো প্রেম এতো ভরসা পরম দয়াল করুণার সাগর শ্রীশ্রী রামঠাকুর ছাড়া কে দিতে পারে ইত্যাদি ভাবিতে ভাবিতে অখিলবাবু ঠাকুরের শ্রীপদে লুটাইয়া পড়িয়া উচ্চস্বরে কাঁদিতে লাগিলেন ।
দিতে বলিলেন ,
" আমি তো আপনাগো ঘরে ঢুকতেই চাই ,
আপনেরা ঢুকতে দ্যান কৈ " ?
আশ্রিত এবং আশ্রয়দাতা যে অভিন্ন এইকথা দয়াল গুরু শ্রীশ্রী রামঠাকুর বারংবার জনে জনে বুঝাইতে চাহিয়াছেন ।
শ্রীঠাকুর চাহিয়াছিলেন একই পরিবার ভুক্ত হইবে তাঁহার সমগ্র আশ্রিতবর্গরা ।
একে অন্যের বিপদে আপদে , অভাব অভিযোগে , পরিবারের আপন জানের মত পাশে দাঁড়াইবে ।
তথাপি আশ্রিতবর্গরা বুঝিতে পারেন নাই ।
তাঁহারা একে অন্যের অভাব অনটনে , বিপদে আপদে , সাহায্য করিলে সাহায্যকারি এবং সাহায্য গ্রহণ কারি উভয়েই নিঃসংকোচ হইতে পারেন নাই ।
তাই হয়তো ঠাকুর মহাশয় মাঝে মাঝে ইত্যাদি বলিয়া আক্ষেপ করিতেন , -- -- --
" এত কইরা বুঝাইলাম কেউ বুঝল না ,
এত কইরা শুনাইলাম কেউ শুনলো না ,
আমার পোড়া কপাল - - - - " ।
আবার কখনও আশ্রিতদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ
ইত্যাদি দেখিলে বলিতেন ,
" আপনেরা এক পাত্রে খাইতে শিখেন নাই " ।
শ্রী সদানন্দ চক্রবর্ত্তী ।
ছন্নাবতার শ্রীশ্রী রামঠাকুর ।
পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৮৭ হইতে ।
*******************************************************************************************************
আনুমানিক ইং ১৯৪১ সনে কোন একদিন আমার স্বর্গীয় পিতা বলিলেন যে ঠাকুর প্রকাশ করিয়াছেন, "ক্রমশঃ কলির আবির্ভাব কাজেই ঘরে ঘরে সত্যনারায়ণ পূজা করা প্রয়োজন। " আমাদের বাড়ীতে পূর্ব্ব হইতেই সত্যনারায়ণ পূজা ও বার মাসে তেরো পার্ব্বণ প্রচলিত ছিল। সেই সময় হইতে ক্রমশঃ বাড়ী বাড়ী যার যার সামর্থ্য অনুসারে প্রতিদিন, বা মাসে কি বৎসরে একদিন করিয়া সত্যনারায়ণ পূজা আরম্ভ হইল। আমাদের সুবিধার জন্য ঠাকুর সত্যনারায়ণের বড় পাঁচালী কোন কোন জায়গায় সংশোধন করিয়াছিলেন এবং নিজ হাতে একটি সংক্ষিপ্ত আকারে সত্যনারায়ণের পাঁচালী লিখিলেন। পরে উহা ছাপান হইল এবং এরপর হইতে সর্ব্বদা ছোট পাঁচালী পাঠ করা হয় কিন্তু বিশেষ কোন উপলক্ষ্যে বড় পাঁচালী পাঠ করা হইয়া থাকে।
বেশ কয়েক বৎসর পরে ঠাকুর শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ রূপে আর এক স্বরূপ প্রকাশ করিলেন। আমাদের উপলব্ধি র জন্য ঠাকুর একবার চৌমুহনী হইতে উপেন্দ্র কুমার সাহার মারফত সত্যনারায়ণ পূজার জন্য কলিকাতার আর্ল ষ্ট্রীট -এ ঁকুঞ্জলাল মজুমদার মহাশয়ের বাড়ীতে ৫টাকা পাঠাইয়া দেন এবং সঙ্গে এক টুকরা কাগজে ঠাকুর লিখিয়াছিলেন, "সত্যনারায়ণ দয়া করিয়া তোমার সিন্নির ৫টাকা গ্রহণ করিবা। ইতি দয়াময় সত্যনারায়ণ। "তাহলে দেখা যায় কলিজীবের উদ্ধারের জন্য রামঠাকুর একাধারে শ্রীশ্রী কৈবল্যনাথ ও আর একদিকে শ্রীশ্রী সত্যনারায়ণের স্বরূপ প্রকাশ করিলেন।
ঠাকুর একসময় প্রকাশ করিয়াছিলেন, "আমিই ত সত্যনারায়ণ, আমিই ত সত্যনারায়ণ, আমিই ত সত্যনারায়ণ, শত শত ধারাল অস্ত্র নিক্ষেপ করিয়াও আপনাদের কেহই কিছু করিতে পারিবে না।"
গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি বিশ্বাস না জন্মিলে, তাঁহার অযাচিত কৃপা উপলব্ধি করা কোনভাবে সম্ভব নয়।
"ওঁ নমস্তে বিশ্বরূপায় শঙখচক্রধরায় চ
পদ্মনাভায় দেবায়, হৃষীক- পতয়ে নমঃ।।"
[সংগৃহীত তথ্য শ্রী গুরুদয়াল বসুরায়চৌধুরী রচিত, শ্রী গুরুরামকৃপাহিকেবলম গ্রন্থথেকে নেওয়া]
*******************************************************************************************************
আজ তাঁহার কথা বলিতে যাইতেছি। দুঃখের বিষয়, তাঁহার কথা বুঝি নাই—বুঝিবার মত সামর্থ্যও নাই।সে মানুষটিকে যেমন সহজে ধরা যায় না,তাঁহার মুখের কথাও তেমন শুধু শুনিয়াই ধারণা করা যায় না। আমরা না বুঝিয়াছি সে মানুষটিকে, না বুঝিয়াছি তাঁহার কথা। যে সাধনা ও একাগ্রতা থাকিলে তাঁহার কথার নিগূঢ় তাৎপর্য্য হৃদয়ঙ্গম করা যায়—তাহা যে আমাদের নাই।যাহার বাল্যাবধি সমগ্র জীবনটাই রহস্যময় এবং সাধারণ বুদ্ধির অগম্য, তাঁহার কথার মধ্যেও যে আমাদের না বুঝিবার মত অনেক কিছু থাকিবে তাহাতে আর আশ্চর্য্য কি।কাজেই আশঙ্কা হয়, —তাঁহার কথা বলিতে গিয়া বোধহয় অজ্ঞানতাবশতঃ শেষে আমাদের কথাই বলিয়া বসিব।বুঝ না বুঝা লইয়াই বা এত কেন?
তিনি তো বলেন,—একেবারে কিছু না বুঝিতে পারাই সব চেয়ে ভালো বুঝা।অজ্ঞানই প্রকৃত জ্ঞান।
আমাদের বাংলাদেশের কোন একখানি অপ্রসিদ্ধ গ্রামে তিনি একদিন জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন বোধহয় সেই দিনটি শুভদিনই হইবে।তাঁহার জনক ও জননী উভয়েই বড় ভাল মানুষ ছিলেন। আচার, নিষ্ঠা ও ধর্ম্মপরায়ণতায় সাক্ষাৎ দেবদেবীর মত।পিতামাতা ভাল না হইলে তাঁহাদের সন্তান এমন হইবে কেন।তিনি কিন্তু শিশুকাল হইতেই যেন একটু কেমন প্রকৃতির ছিলেন। ভবিষ্যৎ জীবনে যাহা হইয়াছেন, তাহার সূচনা ছোট বেলার খেলাধুলার মধ্যেই বেশ ফুটিয়া উঠিয়াছিল।লেখাপড়ার জন্য পিতামাতার যে কতদূর উৎসাহ ছিল তাহা জানি না, তবে বালকেরও যে তেমন আগ্রহ ছিল না ইহা ধ্রুব সত্য।লোকে বলে যে,বোধোদয় পড়িবার সময়ই নাকি তাঁহার বোধের উদয় হইয়াছিল এবং সেই সঙ্গে পঠদ্দশারও অন্ত হইয়াছিল।ভোজনে ও স্নানাদি দৈহিক ব্যাপারে তাঁহার বরাবরই যথেষ্ট ঔদাসিন্য ছিল কিন্তু খেলাধূলায় মনোযোগের বিশেষ অভাব ছিল বলিয়া শুনা যায় না।
'তাঁহার কথা'
ঁপ্রভাতচন্দ্র চক্রবর্ত্তী
(কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতপূর্ব আশুতোষ অধ্যাপক)
শতবার্ষিকী স্মারক গ্রন্থ
চলমান অংশ ১....
****************************
*************************************************************************
জয়রাম জয় গোবিন্দ
বেদবাণী ২য় খন্ড ৬৯ নং পত্রাংশ
*************************************************************************
মধু মাখা কৃষ্ণ নাম।। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।। হরে রাম হরে রাম ,রাম রাম হরে হরে।। কীর্তন
Reviewed by srisriramthakurfbpage
on
June 07, 2023
Rating:
No comments: