ঠাকুর বলিলেন - "এই কেমন ভক্তি, কেমন ভালবাসা! আপনি কি শুধু আমাকে মাথায়ই রাখিয়াছেন, আপনার শরীরের আর কোথাও কি আমি নাই? দিলে সর্ব্বশরীরই দিতে হইবে।"
শ্রীশ্রী কৈবল্যনাথায় নমঃ
' সর্ব্বদাই গুরুর নিকটে থাকিতে লালসা রাখিয়া তাহারই নিকটে তাহারই বাঞ্ছিত অবস্থায়, তাহারই কোলে ছোট ছেলেটির মত সর্ব্বদা বসিয়া আছে । এরূপ কল্পনা করিতে চেষ্টা করিবেন । তাহার রক্ষিত জনের ভয় কি ?
-বেদবাণী ১/৮৬ নং
-বেদবাণী ১/৮৬ নং
ঠাকুর বলিলেন - "এই কেমন ভক্তি, কেমন ভালবাসা! আপনি কি শুধু আমাকে মাথায়ই রাখিয়াছেন, আপনার শরীরের আর কোথাও কি আমি নাই? দিলে সর্ব্বশরীরই দিতে হইবে।"
জয় রাম। জয় গোবিন্দ।
ফেণীতে শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মোত্সব অনুষ্ঠানে অন্যান্য সকল গুরুভ্রাতাদের সহিত রাণীবাড়ী হইতে ঠাকুরের আশ্রিত শ্রীযুক্ত সুরেশ্বর চট্টোপাধ্যায় যোগদান করিয়াছিলেন। সন্ধ্যার পর ফিরিয়া যাওয়ার সময় তিনি যখন কোয়ার্টারের দোতলায় আসিয়া ঠাকুরকে প্রণাম করিলেন তখন ঠাকুর খাটের নিচে বারে বারে দেখিতে লাগিলেন। আমি সামনে ছিলাম কাজেই জিজ্ঞাসা করিলাম - "ঠাকুর মশায়, কি দেখেন?"
ঠাকুর বলিলেন - "দেখেন ত, এইখানে এক জোড়া জুতা ছিল।"
ঠাকুরের কাপড়ের জুতা ছাড়া আর জুতা নাই বলিলাম। এই জুতা জোড়াই আমাকে দেন। ঠাকুর যা বলিলেন আমি তাহাই করিলাম।
ঠাকুর সেই জুতা জোড়া হাতে নিয়া সুরেশ্বর বাবুকে বলিলেন - "আপনার জুতা হারাইয়া গিয়াছে, আপনি এই জুতা পায়ে দিয়া যান, এই দারুন শীত, খালি পায়ে যাইতে পারবেন না।"
সুরেশ্বর বাবু আবেগে কাঁদিয়া ফেলিয়া জুতা জোড়া মাথায় নিয়া বলিলেন - "এই জুতা জোড়া আমি কেমন করিয়া পায়ে দিব? আমি এই চরণ নিত্য পূজা করিব!"
ঠাকুর বলিলেন - "এই কেমন ভক্তি, কেমন ভালবাসা! আপনি কি শুধু আমাকে মাথায়ই রাখিয়াছেন, আপনার শরীরের আর কোথাও কি আমি নাই? দিলে সর্ব্বশরীরই দিতে হইবে।"
সুরেশ্বর বাবু চোখের জল নিয়াই স্থান ত্যাগ করিলেন কারণ গাড়ীর সময় হইয়া গিয়াছে।
ঠাকুর বলিলেন - "শুভবাবুর টাকা আছে, সে জুতা নোয়াখালী যাইয়াই কিনিতে পারিবে, আর সে ত মোটর গাড়িতে যাইবে, তা কস্ট হইবে না।"
ঠাকুরের উপর যারা নির্ভরশীল তাদের জন্য তাঁর কত দরদ ঠাকুরের এই আচরণ হইতে বুঝিতে পারা যায়।
শ্রী শ্রী ঠাকুর প্রসঙ্গে।
শ্রী অখিল চন্দ্র রায়।
............................................................................................................................................................................................
একবার শীতের সময় শ্রীঠাকুর আমাদের দেশের
বাড়িতে আসিয়াছেন ।
ক্রমশঃ ভক্ত সমাগম হইতে লাগিল ।
শ্রীঠাকুর সময় সময় নানা ধর্মের বিষয় নিয়া বলিতেন ।
এইভাবে কিছুদিন চলার পর একদিন সন্ধায় বিভিন্ন প্রসঙ্গ
নিয়া আলোচনা হইতে হইতে অনেক রাত্র হইয়া গেল ।
এদিকে যাদের বাড়ি অনেক দূরে ,
তাহারা বাড়ি ফিরিবার কথা ভাবিতেছেন ।
কিন্তু বেশী রাত্রি হওয়ায় সকলেই চিন্তিত হইয়া পড়িলেন ।
তাঁহাদের মধ্যে কয়েক জন বিশিষ্ট ব্রাহ্মণ ভক্তও ছিলেন ।
ওনাদের মনোভাব বুঝিয়া শ্রীঠাকুর সকল ভক্তদেরকে
সেদিন রাত্রে আমাদের বাড়িতে আহারাদি করিয়া থাকিয়া যাইতে বলিলেন ।
ঠাকুরদাদা ও ঠাকুরমা হাত জোড় করিয়া শ্রীঠাকুরকে
জিজ্ঞাসা করিলেন যে ,
কিভাবে এই বিশিষ্ট ব্রাহ্মণ ব্যক্তিদের ব্যবস্থা করিবেন ?
শ্রীঠাকুর বলিলেন ,
" ওনাদের আজ রাত্রে ভাল ভাবে আহারাদি ও থাকার ব্যবস্থা করার জন্য দীনেশ কে বলেন "।
শ্রীঠাকুরের কথা শুনিয়া ঠাকুরদাদা -ঠাকুরমা ও পিতা -মাতা একটু ইতস্তত করিতে লাগিলেন ,
কারণ সে সময়ে জাত ও ধর্মের অত্যন্ত গোঁড়ামি ছিল ।
বাড়ির সবাই এদের কি ভাবে সেবা -যত্ন করিবেন ,
তাই ভাবিতেছেন ।
এদিকে ব্রাহ্মণ ভক্তগণ চিন্তা করিতেছেন যে ,
আমাদের বাড়ির অন্ন গ্রহণ করিলে জাত নষ্ট হবে কিনা ?
এই নিয়া অনেকের ঘরে বাহিরে অশান্তি হইতে পরে ।
সকলকে ইতস্ততঃ করিতে দেখিয়া ,
অন্তর্যামী শ্রীঠাকুর জ্ঞানআচার্য্য বাবুকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন ,
" যেদিন হইতে ওনাদের কানে মন্ত্র দেওয়া হইছে ,
সেদিন হইতে ওনারা ব্রাহ্মণের চেয়েও উচ্চস্তরে চইলা গেছেন "।
" আপনারা ওনাদের অন্ন গ্রহণ করলে কারওজাত যাইব না " ।
" কিম্বা কেহ সমাজচ্যুত হইবেন না " ।
" বিনা দ্বিধায় আজ আপনারা এখানে রাত্রের আহারাদি
কইরা বিশ্রাম করেন " ।
" সকালে ঘুম থেইকা উইঠা যে যার মত বাড়ি চইলা যাইবেন " ।
শ্রীঠাকুরের অভয়বাণী শুনিয়া সকলেই জয়ধ্বনি দিয়া অন্ন
গ্রহণ করিয়া রাত্রে থাকিয়া গেলেন ।
পরের দিন সকালে সবাই নিজ নিজ বাড়ি ফিরিয়া গেলেন ।
" জয়রাম "
গুরুদয়াল বসুরায়চৌধুরী ।
" শ্রীগুরুরামকৃপাহি কেবলম "
পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৪ হইতে ।
বাড়িতে আসিয়াছেন ।
ক্রমশঃ ভক্ত সমাগম হইতে লাগিল ।
শ্রীঠাকুর সময় সময় নানা ধর্মের বিষয় নিয়া বলিতেন ।
এইভাবে কিছুদিন চলার পর একদিন সন্ধায় বিভিন্ন প্রসঙ্গ
নিয়া আলোচনা হইতে হইতে অনেক রাত্র হইয়া গেল ।
এদিকে যাদের বাড়ি অনেক দূরে ,
তাহারা বাড়ি ফিরিবার কথা ভাবিতেছেন ।
কিন্তু বেশী রাত্রি হওয়ায় সকলেই চিন্তিত হইয়া পড়িলেন ।
তাঁহাদের মধ্যে কয়েক জন বিশিষ্ট ব্রাহ্মণ ভক্তও ছিলেন ।
ওনাদের মনোভাব বুঝিয়া শ্রীঠাকুর সকল ভক্তদেরকে
সেদিন রাত্রে আমাদের বাড়িতে আহারাদি করিয়া থাকিয়া যাইতে বলিলেন ।
ঠাকুরদাদা ও ঠাকুরমা হাত জোড় করিয়া শ্রীঠাকুরকে
জিজ্ঞাসা করিলেন যে ,
কিভাবে এই বিশিষ্ট ব্রাহ্মণ ব্যক্তিদের ব্যবস্থা করিবেন ?
শ্রীঠাকুর বলিলেন ,
" ওনাদের আজ রাত্রে ভাল ভাবে আহারাদি ও থাকার ব্যবস্থা করার জন্য দীনেশ কে বলেন "।
শ্রীঠাকুরের কথা শুনিয়া ঠাকুরদাদা -ঠাকুরমা ও পিতা -মাতা একটু ইতস্তত করিতে লাগিলেন ,
কারণ সে সময়ে জাত ও ধর্মের অত্যন্ত গোঁড়ামি ছিল ।
বাড়ির সবাই এদের কি ভাবে সেবা -যত্ন করিবেন ,
তাই ভাবিতেছেন ।
এদিকে ব্রাহ্মণ ভক্তগণ চিন্তা করিতেছেন যে ,
আমাদের বাড়ির অন্ন গ্রহণ করিলে জাত নষ্ট হবে কিনা ?
এই নিয়া অনেকের ঘরে বাহিরে অশান্তি হইতে পরে ।
সকলকে ইতস্ততঃ করিতে দেখিয়া ,
অন্তর্যামী শ্রীঠাকুর জ্ঞানআচার্য্য বাবুকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন ,
" যেদিন হইতে ওনাদের কানে মন্ত্র দেওয়া হইছে ,
সেদিন হইতে ওনারা ব্রাহ্মণের চেয়েও উচ্চস্তরে চইলা গেছেন "।
" আপনারা ওনাদের অন্ন গ্রহণ করলে কারওজাত যাইব না " ।
" কিম্বা কেহ সমাজচ্যুত হইবেন না " ।
" বিনা দ্বিধায় আজ আপনারা এখানে রাত্রের আহারাদি
কইরা বিশ্রাম করেন " ।
" সকালে ঘুম থেইকা উইঠা যে যার মত বাড়ি চইলা যাইবেন " ।
শ্রীঠাকুরের অভয়বাণী শুনিয়া সকলেই জয়ধ্বনি দিয়া অন্ন
গ্রহণ করিয়া রাত্রে থাকিয়া গেলেন ।
পরের দিন সকালে সবাই নিজ নিজ বাড়ি ফিরিয়া গেলেন ।
" জয়রাম "
গুরুদয়াল বসুরায়চৌধুরী ।
" শ্রীগুরুরামকৃপাহি কেবলম "
পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৪ হইতে ।
........................................................................................................................................................................................................
ঠাকুর বলিলেন - "এই কেমন ভক্তি, কেমন ভালবাসা! আপনি কি শুধু আমাকে মাথায়ই রাখিয়াছেন, আপনার শরীরের আর কোথাও কি আমি নাই? দিলে সর্ব্বশরীরই দিতে হইবে।"
Reviewed by srisriramthakurfbpage
on
November 29, 2023
Rating:
No comments: