শ্রীশ্রী ঠাকুরের কথা শুনিয়া বিস্মিত সদানন্দ বুঝিলেন পুন্ডরীক ঠাকুরের কিছুই অজানা নাই ।

ওঁ নমঃ ভগোবতে শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণায় নমঃ। 

 শ্রীশ্রী রামঠাকুর ঢাকাতে জনৈক আশ্রিত ভক্তের গৃহে শুভবিজয় করিতেছিলেন ।


শ্রীশ্রী রামঠাকুর
শ্রীশ্রী রামঠাকুর


একদিন সকাল বেলায় সদানন্দ ঠাকুর দর্শনে আসিয়া ঠাকুর মহাশয়কে প্রণাম করিয়া সামান্য বাক্যালাপের পরে প্রশ্ন করিলেন , ঠাকুর মহাশয় আপনি বাতাসা পদন্দ করেন না , বাতাসা গ্রহণও করেন না , এই কথা সকলকে বলিতে শুনি । বাতাসা অপসন্দের কারণ কী ? উত্তরে শ্রীশ্রী ঠাকুর স্মিত হাসিতে সদানন্দকে বলিলেন , বাতাসা খাইতে আমার ঘৃণা লাগে । যেখানে বাতাসা বানায় , দ্যাখবেন রাজ্যের খালি গুড়ের বস্তাগুলিরে জলে ভিজাইয়া রাখেছে । বাতাসা বানানের সময় ওই জল ভেজাল দেয় । বস্তা ভিজন জলে কত কী পইড়া মইরা থাকে । আর যেসব গুড় দিয়া বাতাসা বানায়, সে গুলাও ভাল না । দ্যাখলেই ঘৃণা বোধ হয় । সেদিনই বিকাল বেলায় সদানন্দ বাতাসা পট্টির খোঁজে বাহির হইয়া পড়িলেন । শ্রী ঠাকুর মহাশয়ের কথা সরেজমিনে যাচাই করাই উদ্দেশ্য । ছোট ছোট গলি ঘুপটির মধ্যে ঢাকার বাতাসা তৈয়ারী হইতেছে । কোথাও গুড় জ্বাল দেয়া হইতেছে । কোথাও ডালার উপরে ছোট ,বড় মাঝারি বিভিন্ন আকারের বাতাসা বসান হইতেছে জ্বাল দেয়া গুড় হইতে । এমনিতেই ঢাকার বড় বড় ফুলকো বাতাসার সুনাম আছে । চারিদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ফেলিয়া সদানন্দ তাহার অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে দেখিতে পাইলেন , ঠাকুর মহাশয় যাহা যাহা বলিয়াছিলেন তদ্রূপ নানা মাপের মাটির বড় বড় পিপায় , কোথাও ছোট বড় অপরিষ্কার ড্রামের মধ্যে , থ্যাব্ড়ান নোংরা টিনের মধ্যে গুড়ের খালি বস্তার রাশি জলে ভেজান অবস্থায় আছে । আরশোলা , ব্যাঙ , পোকামাকড় এমনকি কোথাও কোথাও ইঁদুর পর্য্যন্ত মরিয়া আছে সেই সমস্ত পাত্রে । গুড় জ্বাল দেয়ার সময় সেই বস্তা ভেজান গাঢ় গুড়ের জল অবলীলাক্রমে ব্যবহার করিতেছে । বস্তাগুলি সচরাচর যে সব বস্তায় গুড় রাখা হয় এবং গুড় শেষ হওয়ার পরে বস্তাতে যে গুড় লাগিয়া থাকে তাহা জলে ভিজাইয়া ব্যবহারের উপযুক্ত করিয়া নেয়া হয় । সাধারণত গরু মহিষ আদির খাবারের গুড়গুলি তখন বস্তাতেই রাখা হইত । সেইদিন রাত্রি বেলায় সদানন্দ শ্রীশ্রী ঠাকুর মহাশয়ের নিকট গেলেন । তাহাকে দেখিয়াই ঠাকুর মহাশয় বলিয়া উঠিলেন , দ্যাখলেন তো বাতাসা কেমনে বানান হয় । শ্রীশ্রী ঠাকুরের কথা শুনিয়া বিস্মিত সদানন্দ বুঝিলেন পুন্ডরীক ঠাকুরের কিছুই অজানা নাই । অথচ তিনি কাহাকেও কিছু না জানাইয়া বাতাসা পট্টিতে গিয়েছিলেন । জয় রাম জয় গোবিন্দ ছন্নাবতার শ্রীশ্রী রামঠাকুর । শ্রী সদানন্দ চক্রবর্ত্তী । পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৫ হইতে ।

...................................................................................................................................................।

সত্যনারায়ণ

সত্যনারায়ণের আবির্ভাবের তৃতীয় বছরের কিছু দিন আগে ঠাকুর জানালেন যে , এই পূজা ইন্দুভূষণ মহাশয় করবেন । ( ঠাকুরগত-প্রাণ , বেদবানী-সম্পাদক , কলিকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইতিহাসের আশুতোষ অধ্যাপক , ড: ইন্দুভূষণ বন্দোপাধ্যায় এম-এ , পি আর এস , পি এইচ ডি । ) কর্তা ( কুঞ্জলাল মজুমদার ) ইন্দুবাবুকে পুজো করতে অনুরোধ করলেন । কর্তার অনুরোধ শুনে ইন্দুবাবু খুবই আনন্দিত হইলেন । ইন্দুবাবু বলেন যে , প্রায় বছর দশ এগার আগে ঠাকুর একবার তাকে সত্য নারায়ণের পুজো প্রণালী শিখিয়ে ছিলেন । তখন ঠাকুর কোন স্থানেই সত্যনারায়ণের প্রবর্তন করেন নি । এতকাল অনেক চিন্তা করেও তিনি ঠাকুরের সত্যনারায়ণ পূজোর পদ্ধতি এবং মন্ত্র শিখানোর তাৎপর্য্য বুঝতে পারেন নি । এবার বুঝলেন যে কেন ঠাকুর এতকাল আগেই তাকে পূজা পদ্ধতি শিখিয়ে ছিলেন । ইন্দুবাবু জানালেন যে এই পূজোর জন্য তাকে আর অনুরোধ করতে হবে না , ঠাকুরের কাজ ঠাকুর নিজেই বহু আগে থেকেই সব ঠিক করে রেখেছেন । সেই বছর থেকে দেহ ত্যাগের আগ পর্যন্ত বরাবরই এই ১৪ আশ্বিনের পুজো ইন্দুবাবুই করেছেন । মাঝে মাত্র দুই বার বাদ হয় । তখন অনিবার্য্য কারণে ইন্দুবাবু কলিকাতায় থাকতে পারেন নাই , একবার দিল্লিতে কোনও সভায় যোগদানের জন্য , আর একবার পাহাড়তলী আশ্রমে (চট্টগ্রাম পাহাড়তলী র শ্রীশ্রী কৈবল্যধাম আশ্রম , এখানে শ্রীশ্রী ঠাকুরের " কৈবল্যনাথ " মূর্তি প্রতিষ্ঠিত ) গিয়েছিলেন । ইন্দুবাবুর পুজো পদ্ধতিও সাধারণ পূজোর মতো নয় । পুজো করতে তার মিনিট পনের কুড়ির বেশি লাগতো না । ঠাকুরের শ্রীচরণে কয়েকটি চন্দন দেওয়া তুলসী , কয়েকটি ফুল , অঞ্জলী দিতেন । তার পর তিনি ধ্যানে বসতেন । অল্পক্ষণ ধ্যানের পারে আরতি করতেন । জয় রাম শ্রীমতী কিরণবালা মজুমদার । ঘরের ঠাকুর শ্রী রামচন্দ্র । পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪০/৪১ হইতে ।

......................................................................................................................................................

ওঁ নমঃ ভগোবতে শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণায় নমঃ। 

বাবা আপনি ভালো থাকবেন আমাদের ভালো রাখবেন জয় রাম।

 গুরু কৃপাহি কেবলম জয় রাম।






শ্রীশ্রী ঠাকুরের কথা শুনিয়া বিস্মিত সদানন্দ বুঝিলেন পুন্ডরীক ঠাকুরের কিছুই অজানা নাই ।   শ্রীশ্রী ঠাকুরের কথা শুনিয়া বিস্মিত সদানন্দ বুঝিলেন পুন্ডরীক ঠাকুরের কিছুই অজানা নাই । Reviewed by srisriramthakurfbpage on December 02, 2023 Rating: 5

No comments:

শ্রী শ্রী রামঠাকুরেরস্বহস্ত লিখিত পত্রাংশ -দ্বিতীয় খন্ড-223

Powered by Blogger.