ঠাকুর বিলোনীয়া বাড়ীতে থাকাকালীন দুই বেলা ভক্তগণ এবং নামপ্রার্থীরী আসিয়া ঠাকুর প্রসঙ্গ শুনিতেন। কাহারো কোন জিজ্ঞাস্য থাকিলে ঠাকুরকে নিবেদন করিতেন এবং ঠাকুর অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় তাহার সমাধান করিয়া দিতেন। দুই বেলা ভোগ রাগ স্বাভাবিক নিয়মে চলিতেছিল। ঠাকুর বরাবর অত্যন্ত স্বল্পাহারী ছিলেন বলিয়া ইহাতে কোন রূপ ব্যাঘাত ঘটিত না। একদিন সকাল হইতে মহা বিপত্তির উদ্রেক হইল, ঠাকুর পেট ব্যথা, পেট ব্যথা করিয়া বিছানাময় গড়াগড়ি দিতে শুরু করিলেন।
কিছুতেই পেট ব্যথার উপশম হইতেছে না দেখিয়া স্থানীয় সরকারি ডাক্তারকে ডাকা হইল। ডাক্তার সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়া ঔষধের নিদান। দিয়া গেলেন। এক সপ্তাহ যাবৎ দুইবেলা নিষ্ঠা সহকারে নিয়ম মাফিক ঔষধ সেবন করণ হইল। কিন্তু রোগীর কোন রূপ অবস্থার উন্নতি হইল না। ঠাকুরের পেটের যন্ত্রণার বিন্দুমাত্র অবসান হইল না। দুই বেলা ভোগ যা কিছু দেওয়া হয় ঠাকুর তাঁর কিছুই নেন না। আমি অত্যন্ত জোরাজোরি করিলে কিঞ্চিৎ ভোগ গ্রহণ করিতেন। ঠাকুরের কষ্ট চোখে দেখিয়া সহ্য করিতে পারিতাম না। তাই একদিন জিজ্ঞাসা করিলাম, "ঠাকুর, কি করিলে সুস্থ্য হইবে বল।” ঠাকুর বলিলেন, "পেটে মল জমছে, পায়খানা হইলে ভালো হয়।” বৈকালে সরকারি ডাক্তার আসিলে ঠাকুরের পায়খানার কথা বলিলাম।
শুনিয়া ডাক্তার বাবু বলিলেন, "বেশ তো, ডুস্ নিলে পেট পরিষ্কার হইবে।" বাড়ীর গুরুজনরা সহ মিলিয়া ঠিক হইল ডাক্তার বাবু এই ব্যাপারে অভিজ্ঞ, তিনিই ডুস্ দিবেন। এই ব্যাপারে ঠাকুরের সম্মতি আবশ্যক। তাই বিষয়টি ঠাকুরের নিকট প্রস্তাব করিলে, ঠাকুর পত্র পাঠ তাহা নাকচ করিয়া দিয়া বলিলেন, "ডাক্তার বাবু ডুস্ দিবেন না।" সেখানে রায় সাহেব উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলিলেন, "বাবা আমরা কেহ ডুস্ দিতে জানিনা, তাছাড়া ডাক্তার বাবু এই ব্যপারে অভিজ্ঞ, উনি ডুস্ না দিলে ডুস্ দিবেন কে? ঠাকুর বলিয়া উঠিলেন, “ডুস্ দিবে ফণী।" আমি প্রমাদ গনিলাম, আমাদের বংশে কেহ কোন দিন ডুস্ দেয় নাই, আমি কোন ছার!
No comments: