শ্রীশ্রীঠাকুর ও বিমলা মায়ের অলৌকিক লীলা
পবিত্র পুরী ধামের এক অলৌকিক ঘটনা, যেখানে শ্রীশ্রীঠাকুর ও শ্রীযুক্ত কেশব বোস মহাশয়ের উপস্থিতি এক মহাজাগতিক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে ওঠে। এই ঘটনায় বিমলা দেবী, পুরীর অধিষ্ঠাত্রী মাতা, ঠাকুরকে ভোজন করানোর এক অলৌকিক রূপে প্রকাশিত হন। ঘটনা কেশববাবুর মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে আজও ভক্তগণের অন্তরে গভীর শ্রদ্ধা ও বিস্ময়ের উদ্রেক করে।
পুরীতে যে ঘরটিতে ঠাকুর এবং কেশববাবু ( শ্রীযুক্ত কেশব বোস মহাশয় ) ছিলেন সেই ঘরটিতে একটি মাত্র তক্তপোষের উপর ঠাকুরের বিশ্রামের জন্য বিছানা পেতে মশারী টাঙ্গিয়ে দিয়ে , কেশববাবু মেঝেতে বিছানা পেতে শুয়ে থাকতেন। কেশববাবু লক্ষ্য করেছেন যে ঠাকুর সমস্ত রাত্রি বিছানার উপর বসে আছেন। কেশববাবু জানতেন যে ঠাকুরের আহারের প্রয়োজন নেই। তাই তিনি সেই বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেননি। কেশববাবু নিজের আহার বাইরে সেরে আসতেন। একদিন রাত্রিবেলা তাদের শয়নকক্ষে এক অত্যাশ্চর্য অলৌকিক দৃশ্য কেশববাবু দর্শন করলেন। তিনি দেখলেন যে , ঘরের বন্ধ দরজা নিজেই খুলে গেলো। ঠাকুর কিন্তু রোজের মত বিছানায় যথারীতি উপবিষ্ট। ঘরে প্রবেশ করলেন রূপবতী এক মাতৃমূর্তি আর ঘরটি আলোয় ভরে গেল। কেশববাবু দেখলেন যে ঐ মাতৃমূর্তির অঙ্গ থেকে আলো নির্গত হচ্ছে। সেই দেবীমূর্তির হাতে সোনার থালায় নানাবিধ খাদ্যবস্তু সুসজ্জিত। শ্রীশ্রীঠাকুরের নিকট উপস্থিত হয়ে সেই মাতৃমূর্তি সস্নেহে মধুর কণ্ঠে বললেন , " এই ধামে অভুক্ত থাকা যায় না। তুমি অভুক্ত আছ। তোমাকে খাওয়াতে এসেছি। " কেশববাবু দেখলেন ঐ মাতৃমূর্তি নিজের হাতে , মা যেমন তার বালক পুত্রকে খাওয়ায় সেইরূপ ঠাকুরকে খাওয়াতে লাগলেন। শ্রীশ্রীঠাকুর বালকের মত নিঃশব্দে আহার করে চললেন। সেই দেবীমূর্তি পরিপাটি করে ঠাকুরকে থালার সুখাদ্যগুলি ভোজন করিয়ে নিজের পরিহিত বস্ত্রের আঁচলে ঠাকুরের মুখ মুছিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। কেশববাবু এই দৃশ্য দেখে ঠাকুরের কাছে গিয়ে এই ঘটনা জানতে চাইলেন। ঠাকুর বললেন , " আপনি সব দ্যাখছেন ? " কেশববাবু বললেন , " হ্যাঁ , আপনাকে তো বালকের মত দেখলাম। " ঠাকুর বললেন , " আপনি মহাভাগ্যবান। ইনি এই ধামের অধিষ্ঠাত্রী মাতা বিমলাদেবী। আমি কিছু খাই নাই দেইখ্যা আমারে খাওয়াইয়া গেলেন। যান এখন শুইয়া পড়েন গিয়া। " কেশববাবু গিয়ে শুয়ে পড়লেন। পরদিন এই বিষয়ে ঠাকুর নীরব থাকলেন। শ্রীশ্রীঠাকুর নারায়ণ , শ্রীশ্রীঠাকুর জগন্নাথ। তাই বিমলামাতা ( মা দুর্গা ) অভুক্ত নররূপী জগন্নাথকে ভোজন করিয়ে গেলেন। শ্রীমতী চন্দনা ভট্টাচার্য্য , স্বর্গীয় ক্ষিতীশ চন্দ্র মুখার্জীর কণ্যা ( সত্যের সন্ধানে ১৪১৯ বর্ষ সংকলন ১ শারদ সংখ্যা , শ্রীশ্রীকৈবল্যধাম , যাদবপুর থেকে প্রকাশিত )
এই অলৌকিক ঘটনা প্রমাণ করে, শ্রীশ্রীঠাকুর জীবন্ত জগন্নাথ, এবং বিমলা দেবী নিজ হাতেই তাঁর সেবা করেন। ভক্তগণ এই লীলার মাধ্যমে শ্রীশ্রীঠাকুরের ঐশ্বরিক সত্তার পরিচয় পান এবং মাতৃরূপী বিমলা দেবীর প্রতি ভক্তি নিবেদন করেন।
লিখেছেন:
শ্রীমতী চন্দনা ভট্টাচার্য্য
(সংগৃহীত: সত্যের সন্ধানে, ১৪১৯ বর্ষ সংকলন ১, শারদ সংখ্যা)
আপনারা যদি এমনই আরও অলৌকিক ঘটনা ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আমাদের চ্যানেলের ভিডিও উপভোগ করতে চান, তাহলে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করতে ভুলবেন না। পাশে থাকা 🔔 বেল আইকনটি প্রেস করে রাখুন, যাতে নতুন ভিডিওর আপডেট সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যান।
No comments: