শ্রীগুরুদেব ❝আমি উপদেষ্টা নই,দৃষ্টান্ত ❞
-শ্রীশ্রীরামঠাকুরের সঙ্কেতপূর্ণ এই অপূর্ব বাণীর একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বর্ণনা করা হইতেছে।
শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্রদেব "শ্রীপদ" সেবাপূজা পছন্দ করিতেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে কতক ঘটনার কথা সদানন্দদার নিকট শুনিয়াছিলাম। তাহার একটি ঘটিয়াছিল এই চৌমুহনীতে উপেন্দ্রদার বাসা বাড়িতে। প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন শ্রীসদানন্দ চত্রুবর্ত্তী মহাশয় এবং ঠাকুরের বিশিষ্ট ভক্ত শ্রীযুক্ত উপেন্দ্র সাহা মহাশয়।
বাসাবাড়ীটি দরমার বেড়া, উপরে টিনের ছাউনী,মাটির মেঝে, এমন একখানা ছোট ঘরে তক্তপোষের উপর একখানা সাদা চাদরে আপাদমস্তক ঢাকিয়া ঠাকুর মহাশয় শুইয়া আছেন। সদানন্দবাবু এবং উপেন্দ্রবাবু এতক্ষন শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গ করিতেছিল। ঠাকুর মহাশয় বিশ্রামে আছেন দেখিয়া সন্ধ্যার কিয়ৎকাল পূর্ব্বে ধূমপান জনিত কারণে ঘর সংলগ্ন ছোট বারান্দার এক প্রান্তে তাঁহারা দুইজন আসিয়া বসিলেন।
তখন সূর্য্যাস্তের পর সন্ধ্যা হইয়া আসিতেছে ধীরে ধীরে। সদানন্দবাবু ঘরের দিকে দৃষ্টি ফেলিতে দেখিলেন ঠাকুর তক্তপোষের উপরে নাই। জানালা দিয়া ঘরের চারিদিকে অবলোকন করিয়া ঠাকুরকে দেখিতে না পাইয়া উপন্দ্রদাকে তিনি কহিলেন,"ঠাকুর মশায়কে তো ঘরে দেখছি না।"
উঠিয়া আসিয়া দুইজনে ভাল করিয়া নজর করিতে করিতে পাইলেন ঘরের এক কোণে যেখানেটায় একখানা ছোট তক্তার উপরে ঠাকুরের কেম্বিসের জুতা জোড়া রাখা হইয়াছে সেখানে মাটিতে সাষ্টাঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুর আপন পাদুকা প্রণামে রত আছেন। ঠাকুর মশায় সাষ্টাঙ্গে পড়িয়াই আছেন।
সদানন্দদাদা ঘরে প্রবেশ করিয়া ঠাকুরকে ঐ অবস্থায় জিজ্ঞাসা করিলেন,"ঠান্ডা মাটিতে এইভাবে শুয়ে আছেন কেন ? ঠান্ডা লেগে যাবে যে।"তাহা শুনিয়া ঠাকুর মহাশয় উঠিয়া পড়িলেন। উঠিয়া একটু যেন লজ্জা পাইলেন।
এমন ভাব করিয়া সদানন্দদার দিকে চাহিয়া ধীরে ধীরে বলিতে লাগিলেন,সন্ধ্যা হইছে "শ্রীপদ" বন্দনা করছিলাম। সন্ধ্যায় শ্রীপদ বন্দনা করা ভালো।" অতি সামান্য ঘটনা। কিন্তু তাৎপর্য অপরিসীম।
ইঙ্গিতে কি জানাইতে চাহিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর ?
জয় গুরুদেব (ছন্নবতার শ্রীশ্রীরামঠাকুর )
No comments:
Post a Comment