শ্রীশ্রীরামঠাকুরের লীলা মাধুরীঃ-- মৃত্যুপথযাত্রী পুত্রের শয্যাপার্শ্বের জানালা দিয়ে এক শ্রীমূর্ত্তি ঘরে ঢুকে তাদের সন্তানের শিয়রের কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন ......

 শ্রীশ্রীরামঠাকুরের লীলা মাধুরীঃ-- 




(শ্রীশ্রীরামঠাকুরের অপ্রকট লীলার প্রায় দশ বছর পরে দয়াল ঠাকুরের করুণা প্রদর্শনের একটি মহিমার কথা)

সতীশ গঙ্গোপাধ্যায়।পরম ভাগবৎ শ্রীমৎ সদানন্দ গঙ্গোপাধ্যায়মহোদয়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র।

নোয়াখালি জেলার সুধারামপুর শহরের বাসিন্দা ছিলেন।

শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্রদেব প্রথম বার নিরুদ্দেশ থেকে গৃহে প্রত্যাবর্তনের পরে তাদের বাসা বাড়ীতে কিছুকাল অবস্থান করেছিলেন।

সতীশ বাবুর জামাতা তখন বাঁকুড়া জেলার সাব-ডিভিসন ম্যাজিস্ট্রেট পদে কর্মরত - সপরিবারে বাঁকুড়াতেই তখন বাস করতেন।

ঐ সময়ে তাদের জ্যেষ্ঠ পুত্রটি কঠিন টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হল. 

রোগীর অবস্থা তখন খুবই সঙ্গটাপন্ন.চিকিৎসকগণ নানারূপ চিকিৎসায় ব্যর্থ 

হয়ে জীবনের আশা ত্যাগ করেছেন.

চিকিৎসকগণের হতাশায় - অবশ্যম্ভাবী পুত্র বিয়োগের আশঙ্কায়স্বভাবতই পিতামাতা চোখের জলে সিক্ত.

মৃত্যুপথযাত্রী পুত্রের শিয়রের কাছে বসে যথাসাধ্য সেবা করে চলেছেন তারা।

সেদিন পুত্রের অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক।


পিতামাতা উভয়ে আসন্ন মর্মান্তিক পরিণতির আশঙ্কায় মাঝে মাঝেই কেঁপে উঠছেন.....

পুত্রের শিয়রে উপবিষ্ট শোকাতুরা জননী ক্লান্তিতে ক্ষণিকের জন্য একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন..

এমন সময় পুত্রের পিতা পাশের ঘর থেকে দেখলেন মৃত্যুপথযাত্রী পুত্রের শয্যাপার্শ্বের 

জানালা দিয়ে এক শ্রীমূর্ত্তি ঘরে ঢুকে তাদের সন্তানের শিয়রের কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন

তারপর তিনি তাঁর ডান হাতখানি পুত্রের কপালে রাখলেন এবং স্বল্পক্ষণ পরে সেই পথেই অদৃশ্য হয়ে গেলেন

এত গভীর রাত্রিতে এরূপ এক আকস্মিক দৃশ্য দেখে তিনি কিন্তু একটুও ভীত হননি।

তিনি বা তার স্ত্রী কখনও শ্রীশ্রীঠাকুরকে দেখেননি। 

কিন্তু তাঁর কথা অনেক শুনেছেন।

শ্রীশ্রীঠাকুরের একখানা আলেখ্য তাদের ঘরের দেয়ালে টানান আছে।

তিনি লক্ষ্য করে দেখেছেন যে আগন্তুক শ্রীমূর্ত্তির অবয়বের সঙ্গে দেয়ালে ঝুলানো ছবিটির যথেষ্টই সামঞ্জস্য আছে।

তিনি ত  তাঁর শ্বশুর মশাইয়ের কাছে ঠাকুরের অহৈতুকী কৃপার কথা অনেক শুনেছেন।

এক নতুন আশার সঞ্চার এখন তার মনে।

xxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxx

সন্তানের শয্যাপার্শ্বে দাঁড়িয়ে দেয়ালে টানানো ঠাকুরের আলেখ্যখানা খুব ভাল করে বারবার দেখতে লাগলেন তিনি.

এদিকে তার তন্দ্রাচ্ছন্ন স্ত্রী তখন চোখ মেলে এদিক ওদিক দেখছেন.

স্বামীকে পুত্রের শয্যা পার্শ্বে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি চিৎকার করে কেঁদে ফেললেন। 

ভাবলেন চরম সর্বনাশ বুঝি হয়েই গেছে.

পুত্র তখন নিদ্রামগ্ন.

ওঁ কৈবল্যং শাশ্বতং শান্তং,
ভক্তি শক্তি পরাত্মিকাঃ।।
প্রেম পিযুষ পূর্ণায়,
সত্যরুপং নমো নমঃ।।
ওঁ নমো ব্রহ্মন্যদেবায়,
নমস্তে ব্রহ্মতেজসে।।
ওঁ সত্যং পরম্ ধীমহি,
ওঁ তৎ সৎ ওঁ।।
🌹🌿


স্বামী স্ত্রীকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন-- 

"আর চিন্তা কোর না, আমাদের খোকা এখন সেরে উঠবে। 

ঐ পটের ঠাকুর স্বয়ং এসে খোকাকে স্পর্শ করে আশীর্বাদ দিয়ে গেছেন।"

এই বলে তিনি স্ত্রীর কাছে সবিস্তারে সব বললেন।

সব শুনে স্ত্রীর চোখের জল আর বাধ মানল না। তার চোখে এখন অঝোর ধারে ধারা বইছে.... 

বুকের ভেতরটা মুচড়ে উঠছে.

ঠাকুর তোমার এত দয়া.. এত করুণা.হে কৃপাসিন্ধু. তোমার শ্রচরণে আমাদের সহস্র কোটি ভক্তিপূর্ণ প্রণাম.


এ শুধু তোমার পক্ষেই যে সম্ভব.চোখের জল মুছতে মুছতে তিনি বলতে লাগলেন--

"ঠাকুর, তোমাকে ত কোন যত্নই করি না।বাবার দেওয়া তোমার পটখানি শুধমাত্র ঘরে টানিয়ে রেখেছি।"

পিতামাতার এসব কথোপকথনের মধ্যে পাশের ঘরে অসুস্থ নিদ্রামগ্ন পুত্রটি জেগে তখন মা মা. করে ডাকছে.তারা দুজনে সন্তানের কাছে এসে দাঁড়ালেন।


সন্তান তখন আনন্দ সহকারে বলছে-"মা, ওই দেয়ালের ঠাকুর এসে আমার কপালে হাত বুলিয়ে দিয়েছেন। 

এখন আমার কোনও কষ্ট নেই.



আমার খুব খিদে পেয়েছে মা - আমাকে তাড়াতাড়ি করে কিছু খেতে দাও."

সেই নিশ্চিত মৃত্যুপথযাত্রী বালক এখন এক উন্নত উজ্জ্বল নতুন মানুষ।

জয়রাম।। জয়রাম।।

জয় গুরু সত্য নারায়ণ।। 

শ্রীশ্রীরামঠাকুরের লীলা মাধুরীঃ-- মৃত্যুপথযাত্রী পুত্রের শয্যাপার্শ্বের জানালা দিয়ে এক শ্রীমূর্ত্তি ঘরে ঢুকে তাদের সন্তানের শিয়রের কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন ...... শ্রীশ্রীরামঠাকুরের লীলা মাধুরীঃ-- মৃত্যুপথযাত্রী পুত্রের শয্যাপার্শ্বের   জানালা দিয়ে এক শ্রীমূর্ত্তি ঘরে ঢুকে তাদের সন্তানের শিয়রের কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন  ...... Reviewed by srisriramthakurfbpage on June 02, 2023 Rating: 5

No comments:

শ্রী শ্রী রামঠাকুরেরস্বহস্ত লিখিত পত্রাংশ -দ্বিতীয় খন্ড-223

Powered by Blogger.