Friday, 2 June 2023

" কেবল কতকগুলি মন্ত্র উচ্চারণ করিলেই পূজা হয় না ।

 " কেবল কতকগুলি মন্ত্র উচ্চারণ করিলেই পূজা হয় না । ভক্তি সহকারে বলিলেই হয় যে , ঠাকুর তুমি কৃপা করিয়া ভোগ গ্রহণ কর ।"
: - - শ্রীশ্রী রামঠাকুর ।

১৯৪০ (ইং) সালে আমি বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় চাকুরী করিতাম । ছুটীর পর “ কুঞ্জবাবুর আর্লস্ট্রীটের বাড়ীতে
ঠাকুরের সহিত দেখা করিতে যাই । ঠাকুরকে প্রণাম করিয়া উঠিতেই কুঞ্জবাবু আমাকে ধরিয়া পড়িলেন ,
“এক ব্যক্তি মানসিক পূজার জন্য সমস্ত জিনিষপত্র কিনিয়া দিয়া গিয়াছেন ,
এ পূজা আপনাকেই করিতে হইবে ।” আমি যত বলি , আমি পূজা করিতে জানিনা ,
কিন্তু সে কথা কিছুতেই তিনি শুনিতে চাহেন না । তিনি আমার জন্য কাপড় আনিতে ভিতরের
ঘরে গেলেন । তখন সেখানে আর অন্য কেহ ছিলনা ।ঠাকুর আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন ,
“ কি হইয়াছে ?” আমি বলিলাম , “ দেখেন আমি পূজা জানিনা ,
কোন দিন পূজা করি নাই , তবুও উনি জেদ করিতেছেন যে ,
আমাকেই নাকি পূজা করিতে হইবে ।" ঠাকুর একথা শুনিয়া আমাকে বলিলেন ,
"কেবল কতকগুলি মন্ত্র উচ্চারণ করিলেইপূজা হয়না ।
ভক্তি সহকারে বলিলেই হয় যে , আমি পূজা জানিনা ,
তুমি কৃপা করিয়া ভোগ গ্রহণ কর ।


ঠাকুরের কথায় ভরসা পাইলাম এবং তাহার কথামত ভালভাবেই কার্য্য সমাপ্ত করিলাম ।
তারপর ঠাকুর প্রণাম করিয়া চলিয়া আসিলাম ।

“বেদবাণী”-তেও অনুরূপ কথা পড়িয়াছি,
“ মন্ত্রাদির প্রতীক্ষা করেনা , ভক্তি প্রেম শ্রদ্ধা হইতেই সেবাকাৰ্য্য সম্পাদন
হইয়া থাকে ।
” (বেদবাণী ১/৩১)।
ঠাকুর আর একদিন আমাদের ময়মনসিং (বাংলাদেশ)-এর বাসায় আমাদের শুনাইয়া
শুনাইয়া বলিতেছেন-“ পূজা শেষ না হইলেও যদি শিশুরা প্রসাদ খাইতে
চায় তবে তাহাদিগকে তখনই প্রসাদ দিতে হয় ।
উহাদের বঞ্চিত করিয়া ঠাকুরকে দিলে ঠাকুর তাহা গ্রহণ করেন না ।
প্রসাদ ছাড়া উৎসব হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি ।”—
শ্রী গৌরীপ্রসাদ চক্রবর্ত্তী ।
শ্রীশ্রী রামঠাকুর ।
পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৩ হইতে ।

শ্রীশ্রীঠাকুর মাকে বললেন,মা , মনে দুঃখ রাখতে নাখতে নাই। কুম্ভ গৃহী সংসারী লোকের জন্য নয়। কুম্ভমেলা সাধু মহাত্মাদের জন্য। তবে লোক সকল কুম্ভে যায় , সাধু দর্শন হয় এই যা। সকলেরই কুম্ভস্নান হয় না। "




জয় রাম জয় গোবিন্দ 🙏
আমার মা ঠাকুরকে বললেন , ঠাকুর,চিরদিন ত রান্না নিয়েই থাকলাম।
কুম্ভ মেলায়ও গেলাম না মনে বড় দুঃখ রয়ে গেলো।
শ্রীশ্রীঠাকুর মাকে বললেন,মা , মনে দুঃখ রাখতে নাখতে নাই।
কুম্ভ গৃহী সংসারী লোকের জন্য নয়। কুম্ভমেলা সাধু মহাত্মাদের জন্য।
তবে লোক সকল কুম্ভে যায় , সাধু দর্শন হয় এই যা। সকলেরই কুম্ভস্নান হয় না। " তারপর ঠাকুর মাকে বলিলেন , " মা , আপনার মনে কুম্ভস্নানের দুঃখ আছে।
আপনি এক ঘটি জল আনেন।" মা এক ঘটি জল ও গামলা আনলেন। ঘটির মধ্যে একসেরের মত জল ছিল। আর গামলায় কোন জল ছিল না।

তাতে অবশ্য ৮/৫ সেরের মত জল ধরে। ঠাকুর খাটের উপর বসে গামলায় শ্রীপাদপদ্ম রাখলেন। মা তার বীজমন্ত্র জপ করতে করতে ঠাকুরের শ্রীচরণে ঘটির জল ঢালতে লাগলেন। সেই ঘটির জল ঠাকুরের শ্রীচরণ ধুয়ে কুলু কুলু শব্দ করে গামলা ভর্ত্তি হয়ে মাটিতে গড়িয়ে পড়তে লাগলো। আশ্চর্য্যের বিষয় গামলা থেকে ঘটি অনেক ছোট ছিল , এত জল কোথা থেকে এলো ? সেই অত্যাশ্চর্য্য দৃশ্য দেখে আমাদের যে কী আনন্দ হয়েছিল তা লেখা দ্বারা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

আমার মনে হল তখন আমরা সকলেই এক অপার্থিব জগতে ছিলাম। সেই সকল দিন আর কখনও ফিরে পাব না। এখনও মনে পড়লে এক স্বর্গীয় আনন্দ অনুভূত হয়।
যাক , তারপর ঠাকুর বললেন , " নেন আপনারা সকলে কুম্ভের স্নান করেন।কাহারও মনে যেন কোন দুঃখ না থাকে। "

আমরা সবাই মিলে সেই কুম্ভের জল মাথায় দিলাম।শ্রীশ্রীঠাকুরের কৃপায় আমাদের সকলের কুম্ভস্নান হয়ে গেলো।
ঊষারাণী গঙ্গোপাধ্যায়
( আমার জীবনে শ্রীশ্রীরামঠাকুর )
May be an image of text
l reactions:
140




No comments:

Post a Comment

Comments system

[blogger][disqus][facebook]

Disqus Shortname

designcart

শ্রী শ্রী রামঠাকুরেরস্বহস্ত লিখিত পত্রাংশ -দ্বিতীয় খন্ড-223

Powered by Blogger.