Friday, 2 June 2023

ঠাকুর জিজ্ঞাসা করিলেন, কি চান? আমি ভীতি-বিহ্বল চিত্তে বলিলাম, “বীজমন্ত্র চাই”।

 ঠাকুর জিজ্ঞাসা করিলেন, কি চান? আমি ভীতি-বিহ্বল চিত্তে বলিলাম, “বীজমন্ত্র চাই”।


দীক্ষা গ্রহণ করিব। আমি শুনিয়াছি ঠাকুর নাকি কোন কোন ক্ষেত্রে বীজমন্ত্র দান করিয়াছেন। আমার পরিবারস্থ সকলে নাম শুনিয়াছেন। রাত্রি ৯টায় ঠাকুর নাম দেওয়া বন্ধ করিলেন।

কমল কুটীরে একটি অলৌকিক ঘটনা---আমার জীবনে শ্রীশ্রীরামঠাকুরl

আমি ঠাকুরঘরের দরজায় দাঁড়াইয়া ঠাকুরের অপূর্ব কারুণ্যমণ্ডিত মুখশ্রী অপলক নয়নে নিরীক্ষণ করিতেছিলাম। ঠাকুরও নির্নিমেষ নেত্রে আমার দিকে তাকাইয়া আছেন। কিছু সময় পর আমার পশ্চাৎ দিক হইতে অধ্যাপক বলিলেন, “ফণী, ঠাকুর তোমাকে চাহিতেছেন, তুমি গিয়া প্রণাম কর।” আমি ঠাকুরের চোখে আমার চোখ নিবদ্ধ করিয়া ধীরে ধীরে অগ্রসর হইয়া ঠাকুরের নিকটস্থ হইতেই তিনি দয়াপরবশে শ্রীপাদপদ্ম দুইখানি সম্মুখের দিকে প্রসারিত করিয়া দিলেন।

শ্রীশ্রীঠাকুর চিত্রপটে শ্রীশ্রীসত্যনারায়ণরূপে যাদবপুর শ্রীশ্রীকৈবল্যধামের পীঠস্থানে চির বিরাজিত থেকে মানবের জাগতিক কামনা- বাসনা পূর্ণ করে উদ্ধার করে থাকেন।

ঠাকুর মৃদু মৃদু হাসিতেছিলেন। আমি ঠাকুরের ঐ মৃদু মধুর হাসির মধ্যে শ্রীপাদপদ্মে প্রাণ ভরিয়া প্রণাম করিয়া করজোড়ে উঠিয়া দাঁড়াইলাম।

ঠাকুর জিজ্ঞাসা করিলেন, কি চান? আমি ভীতি-বিহ্বল চিত্তে বলিলাম, “বীজমন্ত্র চাই”। ঠাকুর বলিলেন, বীজমন্ত্রের প্রয়োজন নাই। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি ঠাকুরের পায়ে প্রণাম করিয়া বাহিরে আসিলাম। লক্ষ্য করিলাম, অধ্যাপক আমার উপর বিরক্ত হইয়াছেন। আমার জ্যেষ্ঠভ্রাতা উষ্মা প্রকাশ করিলেন। তাঁহাদের বিরক্তি ও উষ্মার ভ্রুক্ষেপ করিলাম না।


সদগুরু কৃপালাভ হইলে এইরূপই হইয়া থাকে।

আধ ঘন্টা পর শুনিলাম ভোগ দেওয়ার সময় আসন্ন। এখন সকলকে বাহিরে আসিতে হইবে। এই কথা শুনামাত্র বীজমন্ত্র পাইবার জন্য আমার প্রাণ আকুলি-বিকুলি বটিয়া উঠিল। আমি লক্ষ্য করিলাম ঠাকুর একদৃষ্টে আমার দিকে তাকাইয়া আছেন।
আমি যন্ত্রচালিতের ন্যায় ঠাকুরের দিকে অগ্রসর হইয়া প্রসারিত পাদপদ্মে মাথা রাখিলাম। উঠিয়া দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, আমি আপনেরে নাম দেওয়ার জন্য বইসা আছি। নাম নেন।
আমি জানাইলাম, “না, নাম আমি শুনিব না। আমাকে বীজমন্ত্র দেন।” ঠাকুর বলিলেন, আমি বীজমন্ত্রের প্রয়োজন দেখি না। এই কথা শুনিয়া আমি শ্ৰীপদে মাথা নত করিলে ঠাকুর আমার মাথায় শ্রীহস্ত স্থাপন করিলেন।
আমি ঘরের বাহির হইলাম। অধ্যাপক মহাশয় আমাকে জনান্তিকে ডাকিয়া লইয়া ভর্ৎসনার সুরে বলিলেন, আমি ঠাকুরের সহিত বাচালতা করিতেছি। ভবিষ্যতে যেন এইরূপ আর না করি। একপাশে সরিয়া গিয়া আমি এই বিষয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন এমন সময় শুনিলাম, অধ্যাপক বলিতেছেন— “আপনারা ঠাকুর ভোগের প্রসাদ লইয়া ,,৷৷

No comments:

Post a Comment

Comments system

[blogger][disqus][facebook]

Disqus Shortname

designcart

শ্রী শ্রী রামঠাকুরেরস্বহস্ত লিখিত পত্রাংশ -দ্বিতীয় খন্ড-223

Powered by Blogger.