“আপনার কোন চিন্তা নাই। শ্রীশ্রীভগবান সর্ব্বদা আপনার শিয়রে। বৈকুণ্ঠ হইতে রথ নামিয়া আসিতেছে। আপনি সে রথে বৈকুণ্ঠে যাবেন। শুধু নাম করেন।”
“আপনার কোন চিন্তা নাই। শ্রীশ্রীভগবান সর্ব্বদা আপনার শিয়রে। বৈকুণ্ঠ হইতে রথ নামিয়া আসিতেছে। আপনি সে রথে বৈকুণ্ঠে যাবেন। শুধু নাম করেন।”
(১) আজ তাঁহার কথা বলিতে যাইতেছি।
দুঃখের বিষয়, তাঁহার কথা বুঝি নাই – বুঝিবার মত সামর্থ্যও নাই।
সে মানুষটিকে যেমন সহজে ধরা যায় না, তাঁহার মুখের কথাও তেমন শুধু শুনিয়াই ধারণা করা যায় না। আমরা না বুঝিয়াছি সে মানুষটিকে না বুঝিয়াছি তাঁহার কথা। যে সাধনা ও একাগ্রতা থাকিলে তাঁহার কথার নিগূঢ় তাৎপর্য্য হৃদয়ঙ্গম করা যায়- তাঁহার প্রকৃত তত্ত্ব মনের সামনে ফুটাইয়া তুলিতে পারা যায় – তাহা যে আমাদের নাই। যাঁহার বাল্যবধি সমগ্র জীবনটাই রহস্যময় এবং সাধারণ বুদ্ধির অগম্য, তাঁহার কথার মধ্যেও যে আমাদের না বুঝিরার মত অনেক কিছু থাকিবে তাহাতে আর আশ্চর্য্য কি! কাজেই আশঙ্কা হয়, তাঁহার কথা বলিতে গিয়া বোধ হয় অজ্ঞানতাবশতঃ শেষে আমাদের কথাই বলিয়া বসিব। বুঝা না বুঝা লইয়াই বা এত কেন? তিনি তো বলেন, - একেবারে কিছু না বুঝিতে পারাই সব চেয়ে ভাল বুঝা। অজ্ঞানই প্রকৃত জ্ঞান।
সত্যণারায়ন সেবা অর্থে
শ্রীশ্রী ঠাকুর:
নাম করিতে করিতে সেবা হয়।গুরুপদিষ্ট নাম সর্ব্বদা হৃদয়ে জাগিয়া থাকিলেই সত্যের প্রতিষ্ঠা ও চৈতন্য হয়।এই প্রানময় দেবতাকে আশ্রয় করিয়া নাম করাই সত্যণারায়ন সেবা।
জয়রাম জয়রাম।
চাহিয়া দেখেন স্বয়ং শ্রীহরি
আপনার শিয়রে দন্ডায়মান।
আপনার যখন সময় হইব তখন আমি খুব ছোট হইয়া আপনাকে নিয়া যামু।আমি না আইলে আত্মা নিবে কে? আর কারো নেওনের শক্তি নাই। অধিকার নাই।
ঠাকুর বলিলেন, জয়ন্তী মা কৈবল্য ধাম রক্ষা করতেছেন। তিনি মহাশক্তির তুল্যতালাভ কইরা লোক চক্ষের অন্তরালে থাইকা জগৎ হিতে রত। তিনি কৈবল্য ধামের অধিষ্ঠাত্রীরুপিনী। অনন্তনাগ ফণা বিস্তার কইরা শয়নাবস্থায় আছেন। তাহার জঙ্গার উপর শ্রী মন্দির প্রতিষ্টিত।মন্দির মধ্যে লক্ষীদেবী নিয়ত শ্রীচরণ সেবায় রত আছেন। মহাকালী এক পদ কৈবল্যকুন্ডে, অপরপদ কামশ্রীকুন্ডে স্হাপন কইরা সতত দাঁড়াইয়া আছেন। শিব শক্তিতে হরগৌরী সর্বক্ষণ বিহার করেন। কৈলাশ তীর্থের ফল শিব শক্তিতে পাওয়া যায়। কৈলাস যাওয়ার প্রয়োজন নাই। কৈবল্য শক্তিতে দশ মহাবিদ্যা বিরাজ করতেছেন। অতএব কৈরল্যনাথের সেবায় আত্মনিয়োগ কইরা জীবন সার্থক করেন। ঠাকুর চোখ বন্ধ করিয়া বসিয়া আছেন। প্রায় দশ মিনিট পর তিনি নিচুস্বরে বলিলেন, একদা অধর্ম আইসা আশ্রমের সব নষ্ট করব। ধ্বংস হইব না। কালে এক মহাপুরুষ আবির্ভুত হইয়া কৈবল্যধামে সর্ব ধর্মের সমন্বয় সাধন করবেন। ইহা মহাতীর্থে পরিণত হইব, চিন্তা নাই।জয় রাম জয় গোবিন্দ রামভাই স্বরণে, ৫৪ পৃঃ
"গুরোর্ব্বচঃ সত্যমসত্যমন্যৎ "
গুরু ভিন্ন এ জগতে আত্মীয় আর কেহ নাই। গুরু সর্ব্বদা রক্ষা করেন, অতএব গুরুর প্রতিপোষক হইয়া শুচি থাকিবেন। অন্যথা করিবেন না। সংসার মায়া জালে ব্যাপ্ত, চরাচরে মোহপাশ ঘুরিতেছে, আপাততঃ মধুর পরিণামে বিষোপম হইয়া থাকে।
সত্য হইতে বল নাই।
ত্যাগ বই আর ধর্ম্ম নাই।
গুরু বাক্য বই আর বেদ নাই।
গুরুর বাক্য পালন বই আর কর্ম্ম নাই।
গুরুর দয়া বই আর ধন নাই, মুক্তিও নাই।
(স্বধর্ম্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্ম্মো ভয়াবহঃ – ভগবৎ বাক্য)
মুনিভিঃ পন্নগৈর্ব্বাপি সুরৈর্ব্বা শাপিতো যদি, কালমৃত্যুভয়াদ্বাপি গুরু রক্ষতি পার্ব্বতি।
এই কথাটি মনে রাখিলে কোন কুহক প্রলোভনে পড়ে না, ঘরে বসিয়া সমস্তই পায়।
সংসার শব্দটিই অভাবের স্মারক, যাহাতে মনের সুখদুঃখ উদিত হয় তাহাই সংসার ।
শ্রীশ্রী রাম ঠাকুর
ঠাকুর ভোগঃ
এক বৃদ্ধলোক ঠাকুরের সহিত দেখা করিতে আসিতে বড়বাজার হইতে অতি উৎকৃষ্ট কয়েকটি ফজলি আম আনাইয়াছিলেন। প্রথমে তিনি প্রতাপবাবুকে তিনটি আম তুলিয়া রাখিতে বলিয়াছিলেন। একটু পরে আবার বলিলেন যে, তিনটির প্রয়োজন নাই, দুইটি রাখিলেই চলিবে। এই বলিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া গেলেন কিন্তু একটু পরেই আবার ফিরিয়া আসিয়া বলিলেনঃ "উনি তো কিছুই খান না শুনিয়াছি, দুইটির দরকার নাই, একটাতেই হইবে।" এই কথা শুনিয়া আমি প্রতাপবাবুকে বলিলামঃ এই আম ঠাকুরের ভোগে লাগিবে না।" তিনি একটু জিজ্ঞাসু নেত্রে আমার দিকে চাহিলেন। আমি তাহাকে জানাইলাম যে, আম কাটিয়া দিতে আমি নিষেধ করিতেছি না, কিন্তু আমার বিশ্বাস যে ঠাকুর ইহা গ্রহণ করিবেন না। ইহার কিছুক্ষণ পরে ঘি, চিনি ও কলা এবং কয়েকটি বিভিন্ন ফলের টুকরা ঠাকুরকে দেওয়া হইল। ঐ আমটিও প্রতাপবাবু সযত্নে কাটিয়া থালায় সাজাইয়া দিলেন। ঠাকুর ঘি, চিনি ও কলা
একত্রে মাখিয়া গ্রহণ করিলেন এবং ফলও সামান্য কিছু খাইলেন। পরিশেষে ঐ আমের একটি টুকরা মুখে দিয়া বলিলেন যে, আমটা তেতো এবং টুকরাটি থালার পাশে রাখিয়া দিলেন। আমরা সকলেই সেই আম প্রসাদ পাইয়াছিলাম; অতি উৎকৃষ্ট গাছপাকা ফজলী, মিছরির মতো মিষ্টি কিন্তু ঠাকুর বলিলেন যে, আমটা তেতো। এই জাতীয় ঘটনা আমি জীবনে আরও অনেকবার প্রত্যক্ষ করিয়াছি এবং আমার বদ্ধমূল হইয়াছে যে, ঠাকুরের খাওয়া সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করিত যে খাওয়াইত তাহার মন ও নিষ্ঠার উপর।
রাম ঠাকুরের কথা
ওঁ নমো ভগবতে শ্রীরামচন্দ্রায় নমো নমঃ
ওঁ তৎ সৎ ওঁ
শ্রীশ্রী রাম স্তোত্রম্
"প্রাণ এব পরোধর্ম্ম গুরুরেবাশ্রয় পরঃ'ঃ।
" তদৈব লভতে শান্তিং নিরপেক্ষ ভবেদ্ যদা।।
ওঁ নমো শ্রীরামচন্দ্রায় মৃদু মধুর ভাষিণে।
সৌম্যশান্তাবতারায় তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।
বেদ-বাণী*সাধ্য ও সাধন তত্ত্ব, ১ম খণ্ড ৫ম পর্ব ঃ--
গুরু-গীতা
গুরু গীতাই জগতের অভাব নাশ করিয়া পরম শান্তি দিয়া থাকেন। গীতার তুল্য আর জগতে কিছুই নাই। ১/২৪১
গুরুর বাক্য পালন ঃ
প্রকৃতি গুণের বশবর্তী হইলে গতাগতি ঘুচে ু।অতএব সর্ব্ব রকম সাধন কর্ম্মে না লোভ রাখিয়া শুদ্ধ গুরুর বাক্য পালনে যত্নশীল হইতে চেষ্টা করিবে, পরিশিষ্ট শান্তিই ভোগ হইবে। অন্য চিন্তা করিবে না, উপস্থিত বাসনার বেগ সহ্য করাই ধর্ম্ম। বাসনার অনুশীলন করিতে নাই, মাত্র গুরুর আদেশ পালনই করিবে। ১/১৫৪
চরম ধর্ম্ম
সর্ব্বদা "সুখে দুঃখে সমে কৃত্বা লাভালাভৌ জয়াজয়ৌ '' গীতা নায়ক বিবৃত করিয়া রাখিয়াছেন। পিতা সেবায় সহ্য (সহিষ্ণু) শ্রদ্ধা(তৃপ্তি মিলন) অর্থাৎ ভাব হইয়া প্রেম উৎপন্ন হয়। পরে আনন্দ (পরমানন্দ) রূপ পুত্র অর্থাৎ পবিত্র হয়। কোন জঞ্জাল থাকে না, নিষ্কৃতি পায়।ইহাই চরম ধর্ম্ম। ১/৩৭৬।
জগৎ ঃ
চরাচর জগতের স্বভাবই যোগ বিয়োগ। এই যোগ বিয়োগ হইতে মুক্তির জন্য পতিরই চিন্তা সর্ব্বদা করাই উচিৎ।১/২৯০
জগতের স্থুল আবরণে কিছুরই নিত্যত্ব নাই। অনাবৃত বীরের মৃত্যু হয় না, জন্মও হয় না।১/২৮।
জীব ঃ
সংসার মমতাজালে বদ্ধ থাকায় জীবগণ কার্য্যকারণ স্মরণ করে। ১/৭০।
জীবগণ অনর্থক আশঙ্কার অধীনে যাইয়া চিন্তার তরঙ্গে কষ্ট পায়। সংসারে যতই অভাব ততই শান্তি পরিণামে উদয় হয়। যাহাতে সমস্ত ভার ভগবৎপদে ন্যস্ত করিতে পারা যায় তাহাই করিবেন। ১/৭১।
জীবত্ব ঃ
ভগবানের স্বভাব জীবত্ত নিত্যদাস অভিমান। কর্ত্তৃত্বাভিমান আবরণে সেই নির্ম্মল স্বভাব ভুলিয়া যায়, এই দরুণেই জীবের জন্ম মৃত্যুর অধীন ছাড়িতে পারে না। ১/১৬১।
জীবের প্রধান কর্ম্ম ঃ
কর্ত্তৃত্বাভিমান আনন্দের নিকট হইতে মুক্ত হইবার জন্য সর্বদা ভগবান পতি হৃদয়ে রাখিবার জন্য চেষ্টা করা, ইহাই জীবের প্রধান
কর্ম্ম। ১/৩৮৭। (ক্রমশঃ)
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
জয় গুরুদেব। জয় রাম, জয় সত্য নারায়ণ।
ওঁ নমো শ্রীরামচন্দ্রায় নমো নমঃ ঃ--
শ্রীশ্রী রাম স্তোত্রম্ ঃ
গুরুবে জ্ঞানরূপাায় সংসারান্ধতমোনুদে।
শ্রীমদ্রাসরসোল্লাসরসিকায়রসাত্ননে।।
শ্রীশ্রী গুরু প্রণাম ঃ--
বিন্দুনাদ-কলাতীতং তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।
বেদবাণী-সাধ্য ও সাধন তত্ত্ব-১ম খণ্ড
জ্ঞান
ভগবানের নিকট বুদ্ধি থাকিলেই সমস্ত কার্য্য পূর্ণ হয় মন বিষয়ে লিপ্ত থাকে, তাকে স্থির করিবার চেষ্টা অনর্থক। মনকে স্থির করিলে
মাত্র দেবতাদির সঙ্গ সিদ্ধি হয়,আত্মার উদ্ধার হয় না,কারণ মনের দ্বারাই কল্পনা হইয়া থাকে। গতাগতিই স্বভাব কাজেই গতাগতি ঘোচে না। এই জন্যই জ্ঞানের সঙ্গে থাকিতে চেষ্টা করিতে হয়। জ্ঞানেই পাপ পূণ্য সুখ দুঃখ হইতে মুক্ত করে। আত্মার উদ্ধার হয়। ১/১৫০
জ্ঞানচক্ষু-
সংসার মায়ার দ্বারা বিবর্ত্তন হইলেও কর্ম্মফল ভোগ করিতেই হইবে। এমন কোন স্থান নাই যে পুন্ডরীক চক্ষে প্রকাশ নাই। মন বুদ্ধি জ্ঞানাদি ভাবের দ্বারায় সেই চক্ষু প্রকাশমান হইয়া থাকায় তাকে ছাড়া কোথায় স্থান পাইতে পারে যে তাহার অগোচর হইবে?
ধর্ম,কর্ম্ম, সম্পদ যাহা জগতে উদয় অস্ত হইতেছে সম্বন্ধন দ্বারা বিশিষ্ট রূপে দেদীপ্যমান থাকিতে কোন রূপে মলিন হইবে না। এই সংসার মায়ার চক্রে যে যে ভাবেই বুঝুক সে সে ভাবেই প্রত্যক্ষতা লাভ করিবে সংশয় নাই। ১/৯০
তিতিক্ষা-
ভগবান মঙ্গলময়। সময়চক্রে নানান উপসর্গ জুটিয়া থাকে। আবার সময়ে সকলি চলিয়া যায়। এইজন্য কালচক্রের আগম নিগমকে
তিতিক্ষা করিতে হয়। ১/২১২
আত্মীয় বন্ধু বান্ধবাদি হইতেই নানান অশান্তি
কারক বিপ্লব সংঘটিত হইয়া জীবদ্দশায় উৎপীড়ন করিয়া তোলে। এই সকল স্ব স্ব ভাগ্যেই হইয়া থাকে মনে করিয়া কেবল তিতিক্ষা করিবার চেষ্টা করিতে করিতে সকল
ভাবগুলিই মার্জিত হইয়া পরম পবিত্র নিত্য সুখকর আনন্দ তরঙ্গে ভাসিয়া বেড়াইতে সক্ষম হয়। ১/২৩৭
ত্যাগ-
ত্যাগং, সত্যং,শৌচ,দয়া পরস্পর উদয় হইতেই হয়,অতএব সর্ব্বদা ত্যাগকে আশ্রয় করিতে চেষ্টা করিতে হয়। সেই ত্যাগকে লাভ করিতে হইলেই ঈশ্বরকে, অর্থাৎ ঐশ্বর্য্যশালীর প্রয়োজন। ক্ষেম, স্থৈর্য্য, আরোগ্য, ঐশ্বর্য্য, অতএব ক্ষেম অর্থাৎ সহিষ্ণুতা সহ্যকরা ; সকল বেগ সহ্য করিতে করিতে ক্ষেম হয়,পরেই স্থৈর্য্য (স্থির) হয়,স্থির হইলেই আরোগ্য হয় অর্থাৎ ব্যাধি বন্ধন থাকে না।পরেই কোন অভাব না থাকিলেই ঐশ্বর্য্য হয়,পরেই ত্যাগ হয়। ১/৪
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে
"মানুষ " আমি " তে বদ্ধ জীব।
এইটাই মহামায়ার বন্ধন ।"
শ্রীশ্রী রামঠাকুর ।
জয়রাম 卐 জয়গুরু।
শুরু করিলেন ---
কর্তৃত্ব করতে যাইয়া কেবল কর্মফল বৃদ্ধি করে ।
এই ঋণ শোধ হয়না বইলাই জন্মমৃত্যূ উপভোগ করে ।
ভবসাগর তারণ হয় না । ভব কি ?
ভব হইল " আমি ও আমার " ।
এই "আমি "এবং " আমার " মধ্যে আকৃষ্ট হইয়া জীব অহং
জ্ঞানে চিরকাল ঘুইরা বেড়ায় ।
মরুভুমের আকর্ষণ শেষ হয় না ।
গতাগতিও ঘুচে না ।
মানুষ " আমি " তে বদ্ধ জীব ।
এইটাই মহামায়ার বন্ধন ।
সেই জন্য মানুষ এই পঞ্চভূতের রাজ্যে আইসা তার অচেতন , জড় ,অস্থায়ী , অনিত্য দেহটারে নিয়া কামনায় বাসনায়
" আমি ", " আমার " বইলা দগ্ধ হইতেছে ।
" আমি " হইল মন , " আমার " হইল বুদ্ধি , অর্থাৎ বোধ ।
এই মন ও বুদ্ধির বেগ ধৈর্য ধইরা থাকতে থাকতে মানুষ
যখন " আমি " , " আমার " এই দক্ষ যজ্ঞ , নামযজ্ঞের প্রভাবে ভুলতে পারবে , তখনই হইল সত্যনারায়ণ প্রতিষ্ঠা ।
অতএব সত্যনারায়ণের নামের শরণ লইতে অভ্যাস করবেন।
চিরকাল কর্তৃত্ব কইরা কি লাভ করছেন?
আপনের ভাগ্যের অতিরিক্ত কিছুই পান নাই ।
কর্তা হইতে যাইয়াই অপার অভাব চিন্তায় সর্বদা কষ্ট
ভোগ করতেছেন ।
জানবেন , আপনে কর্তা নন।
যদি কর্তা হইতেন তবে আপনের বাসনা অনুযায়ী সকল কার্য কেন সফল করতে পারেন না ?
তাই শাস্ত্র বলছে ---
" ন কর্তৃত্বং ন কর্মাণি লোকস্য সৃজতি প্রভূঃ ,
ন কর্মফালং সংযোগে স্বভাবস্তু প্রবর্ততে " ।
অতএব বিচার কইরা দেখবেন নিভৃতে ,
নির্জনে আপনে কে ?
আপনের কর্তব্য কি ?
আপনের তাপের কারণ কি ?
তবেই দুর্দিন যাইয়া সুদিন উদয় হইব ।
জয়রাম
শ্রী ফনীন্দ্র কুমার মালাকার লিখিত
"রামভাই স্মরণে "
পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৬ হইতে
পরমপুরুষ পরমভাগবত ত্রিকালদর্শী শ্রীশ্রী গুরু সত্য নারায়ণ মুখনিঃসৃত অমৃতবাণী -----
স্বয়ং গুরুদেব নিজ মুখে বলেছেন - বেদবাণী -
(২/৯)
প্রঃ শান্তি কিসে পাওয়া যায়
উঃ গুরুদেব বলছেন ---
মানুষ শান্তিই খুঁজিয়া বেড়ায়, কিন্তু কি কৌশলেে উহাকেে লাভ করিতে হয় তাহা জানে না।
উহাকে অর্থাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে --
ভাল মন্দ, জয় পরাজয় লইয়া থাকিলে, কামনা বাসনা দূর হয় না
এবং চিত্তের উদ্বেগ ও দৈন্য অপসারিত হয় না।
ইহার ফলে চিরদিন হাহাকার ও ছুটাছুটি করিয়া
আমাদিগকে বেড়াইতে হয়।
কেমন করিয়া জন্মজন্মান্তরের জ্বালা জুড়াইতে পারা যায়--- এই প্রশ্ন ইহার মীমাংসা করিতে পারিয়াছেন
স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন -- নিত্য বস্ত বা স্বভাবের সঙ্গ না করিলে দুঃখের হাত হইতে এড়াইবার আর অন্য উপায় নাই।
নিজের কর্ত্তৃত্ববুদ্ধি একেবারে বিসর্জ্জন করিতে না পারিলে শান্তিলাভ করা অসম্ভব।
প্রঃ নিত্য বস্তু কি
উঃ গুরুদেব উত্তর দিচ্ছেন -
যাহাকে কোনও প্রকারে ত্যাগ করা যায় না তাহাই নিত্য।
যাহাকে ধরিয়া থাকিলে পাপ তাপ,দুঃখ যন্ত্রণা ভয়ে পলাইয়া যায় তাহাই নিত্য।
এই নিত্যের সেবা করাই ধর্ম্ম।
প্রাণ নিত্য, যে হেতু তাহাকে ছাড়িয়া এক মুহূর্তও থাকা চলে না।
যে প্রাণ জগতের আশ্রয় এবং যাহার ক্রিয়া বা স্পন্দনের বিরাম নাই, সেই প্রত্যক্ষসিদ্ধ প্রাণ দেবতার সঙ্গ করিতে হয়।
একটা কিছুহ আশ্রয় বা অবলম্বন না করিয়া সাধন ভজনে অগ্রসর হওয়া যায় না।
কাজেই যিনি সকলের আশ্রয়, সর্ব্বভূতের প্রাণ এবং সর্ব্বব্যাপক তাঁহারই আশ্রয় গ্রহণ করিতে হয়।
প্রঃ এই জন্য বৈষ্ণবেরা কি বলেন
উঃ বৈষ্ণবেরা বলেন -- "আশ্রয় লইয়া ভজে৷ তারে কৃষ্ণ নাহি ত্যাজে ''।
সর্ব্বাশ্রয় ভগবানের কথা তিনি অনেক সময় বলিয়া থাকেন। এই আশ্রয়কেই উপনিষদে বলা হইয়াছে " সর্ব্বলোক প্রতিষ্ঠা। ''।
জয় গুরু সত্য নারায়ণ। বেদবাণী
“আপনার কোন চিন্তা নাই। শ্রীশ্রীভগবান সর্ব্বদা আপনার শিয়রে। বৈকুণ্ঠ হইতে রথ নামিয়া আসিতেছে। আপনি সে রথে বৈকুণ্ঠে যাবেন। শুধু নাম করেন।”
Reviewed by srisriramthakurfbpage
on
December 24, 2023
Rating:
No comments: