গুরুজনদের আদেশ শুনিয়া নিরুপায় ভাবে মাথা নত করিয়া মনে মনে প্রার্থনা করিতেছিলাম । ঠাকুর আজ আমাকে বাঁচাও , নতুবা ভয়ঙ্কর বিপদে ফেলিবে । তুমি জান ঠাকুর ।
কৃপাময় গুরুদেব শ্রীশ্রী রামঠাকুর
দিবা আটটায় শ্যামাদা ( শ্রীমৎ শ্যামাচারণ চট্টোপাধ্যায় )রাজসূয় যজ্ঞ উপলক্ষে পূজা আরম্ভ করিলেন ।নয়টায় পূজা সমাপ্ত করিয়া শ্রীঠাকুর শাস্ত্রীমহাশয়কে ধুতি ও নামাবলি দিয়া রাজসূয় যজ্ঞের পুরোহিত পদে বরণ করিলেন ।
শাস্ত্রীমহাশয় ধুতি পরিধান করিয়া নামাবলি গায়ে দিয়া যজ্ঞ আরম্ভ করিলেন ।শ্যামদা আরতি শুরু করিলেন ।
দশটায় শাস্ত্রীমহাশয় যজ্ঞ সমাপন করিয়া ,
শ্যামদাও আরতি সমাপ্ত করিয়া ভোগ নিবেদন করিলেন
ভোগ সরাইবার জন্য গোঁসাইকে নির্দেশ দিয়া ,
তিনি শ্রী ঠাকুরকে ভোগ দেওয়ার জন্য দালানে
চলিয়া যান । তখন আমাদের দল কীর্তন করিতেছিল ।
কিছুক্ষণ পর মধুদা আসিয়া আমাকে বলিলেন ,
শীঘ্র চল , শ্রীঠাকুর তোকে ডেকেছেন ।
আমি মধুদাসহ দালানের বারান্দায় উঠিয়া দেখি শ্যামদা , পিতাঠাকুর , বড়দা , ঠাকুরভাই ও প্রবীণ ভক্তগণ দাঁড়াইয়া আছেন ।
আমি শ্যামদার নিকট গেলে তিনি কাঁদো কাঁদো স্বরে বলিলেন , আমি রাজভোগ লইয়া শ্রীঠাকুরের সম্মুখে দিবার পর , ঠাকুর ভোগের দিকে তাকাইয়া বলিলেন ,---
এইগুলি কি দিছেন ? এইগুলি রাজরাজার খাদ্য, আমার না । আমি দরিদ্র ভিখারী ব্রাহ্মণ ,
আপনেগ দ্বারে দ্বারে মাইগা খাই ।
সব জাইনা শুইনা এইসব উপাদেয় খাদ্য দিয়া
উপহাস করছেন কেন । আমি আপনেগ উপহাসের পাত্র হইয়া এইখানে আর থাকমু না । এখনই চইলা যামু । আমার সামনে থাইকা শীগগির এই রাজভোগ নিয়া চইলা যান । কে আছেন , ফণীবাবুরে ডাইকা দেন ।
দরজায় থেকে গুরুভ্রাতারাও সকল কথা শুনতেছেন ।
আমার জীবনে আমি এই প্রথম শ্রীঠাকুরের
এইরূপ মূর্তি দেখলাম । আমি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে প্রসাদের পাত্র নিয়া আসি । শাস্ত্রীমহাশয় গিয়া বহু স্তবস্তুতি করার পরও তাকে বিদায় করে দেন ।
যশোদামাও বিফল মনোরথ হয়ে ফিরেছেন ।
এখন তুই গিয়ে যাওয়াটা বন্ধ করতে পরিস
কিনা দেখ । বড়দা বলিলেন ,--
শ্রীঠাকুর জামা গায়ে , জুতা পায়ে , পুটলি বগলে ,
লাঠি হাতে নিয়া বসে আছেন ।
তুমি গেলে তোমাকে ঠাকুর কোথাও দিয়ে আসতে বলবে , তুমি নানা অজুহাত দেখিয়ে পরে নিয়ে যাবে বলবে । প্রমথ বাবু , ড: দাসগুপ্ত , শুভবাবু আদি সকলেই একই কথা বলিলেন । আমি কি আর করিব ।
গুরুজনদের আদেশ শুনিয়া নিরুপায় ভাবে মাথা নত করিয়া মনে মনে প্রার্থনা করিতেছিলাম ।
ঠাকুর আজ আমাকে বাঁচাও , নতুবা ভয়ঙ্কর বিপদে ফেলিবে । তুমি জান ঠাকুর ।
শ্রী ফনীন্দ্র কুমার মালাকার লিখিত ,
" রামভাই স্মরণে "
পৃষ্টা সংখ্যা ৯১ হইতে ।
,
,
গুরুজনদের আদেশ শুনিয়া নিরুপায় ভাবে মাথা নত করিয়া মনে মনে প্রার্থনা করিতেছিলাম । ঠাকুর আজ আমাকে বাঁচাও , নতুবা ভয়ঙ্কর বিপদে ফেলিবে । তুমি জান ঠাকুর ।
Reviewed by srisriramthakurfbpage
on
March 10, 2024
Rating:
No comments: